কানাডায় বঙ্গবন্ধুর বিপুল সংবর্ধনা
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আটোয়া উপস্থিতির ওপর কমনওয়েলথ নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি স্থির হয়ে আছে বলে অটোয়া থেকে এনার প্রতিনিধি মি. গােলাম রসুল মল্লিক জানাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুগােশ্লাভিয়ায় ৫ দিনব্যাপী রাষ্ট্রীয় সফর শেষে কমনওয়েলথ প্রধানমন্ত্রীর সম্মেলনে যােগদানের জন্য গতকাল অটোয়ায় এসে পৌঁছেছেন। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ বিমানের একটি বােয়িং-এ অটোয়ায় এসে পৌছালে কানাডা সরকারের উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাগণ এবং কানাডায় বসবাসকারী বাঙালিরা তাকে বিপুল সংবর্ধনা জানান। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সম্মেলনে যােগদানকারী অধিকাংশ দেশেরই সরকার প্রধানদের অটোয়া উপস্থিতি শেষ হলাে। বঙ্গবন্ধুসহ ৩২টি কমনওয়েলথ দেশের সরকার প্রধান এই সম্মেলনে যােগদান করছেন। সম্মেলন ২ আগস্ট শুরু হবে। এখানকার কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকগণ দক্ষিণ এশিয়ার নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রতি মনােযােগ আবদ্ধ রেখেছেন এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রতি অত্যন্ত গুরুত্ব আরােপ করছেন। পর্যবেক্ষকগণ বার্তা সংস্থা এনাকে জানিয়েছেন যে, সম্মেলনে অন্যান্য দেশ সমূহের সাথে বিশেষভাবে বঙ্গবন্ধু যােগদানে এক নতুন আশার দিগন্ত উন্মােচিত হবে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট ত্যাগ স্বীকার ইতােপূর্বে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। কূটনৈতিক মহল সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের জাতির জনকের যােগদান সম্মেলনে একটি উল্লেখযােগ্য বিষয় বিবেচিত হবে। সম্মেলন সূত্রে এনাকে জানিয়েছেন যে, বিশ্ব পরিস্থিতি ও বর্তমান বিশ্বের ক্ষমতার চেহারা পরিবর্তনের ধরনসহ কমনওয়েলথ দেশসমূহের মধ্যে সমন্বিত অর্থনৈতিক কারিগরি এবং বৈজ্ঞানিক সহযােগিতার বিষয় সম্মেলনে আলােচিত হবে। বিশ্ব শান্তি এবং জোটনিরপেক্ষ নীতির একজন বলিষ্ঠ প্রবক্তা হিসাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কমনওয়েলথ দেশসমূহের মধ্যে বৃহত্তর সহযােগিতা গড়ে তােলার বিষয়ে তার ধ্যান-ধারণা সম্মেলনে তুলে ধরবেন। বলে পর্যবেক্ষকগণ মনে করছেন। বঙ্গবন্ধু সম্মেলনে নিশ্চিত ভাবে শান্তি সমৃদ্ধি ও জোট নিরপেক্ষ নীতি সম্পর্কে তার ধারণা ব্যক্ত করবেন এবং সম্পদের একটি বৃহৎ অংশের সুষ্ঠু বণ্টনের মাধ্যমে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলাের মধ্যকার ব্যবধান দূর করা যে একান্ত জরুরি, তা কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের অনুধাবন করার চেষ্টা করবেন। বঙ্গবন্ধু বিশ্বকে যুদ্ধ বিগ্রহ ও অস্ত্র প্রতিযােগিতা থেকে বাঁচাতে এবং সর্বত্র উত্তেজনা নির্মূল করে জনগণের শান্তি সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা রক্ষা করার জন্য কমনওয়েলথ দেশগুলাের প্রতি আহ্বান জানাবেন।১
রেফারেন্স: ১ আগস্ট ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ