You dont have javascript enabled! Please enable it!

কমনওয়েলথ সম্মেলনে সমৃদ্ধশালী জাতিবর্গের প্রতি বঙ্গবন্ধুর উদাত্ত আহ্বান

অটোয়া। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বের উন্নত দেশগুলােকে নানা সমস্যা ও উদ্বেগে জর্জরিত উন্নয়নশীল জাতিসমূহের পাশে এসে তাদের দুঃখ-দুর্দশায় শরিক হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, চারদিকে অভাব দারিদ্র্য আর বিভীষিকার মাঝখানে মুষ্টিমেয় দেশের কাছে সমস্ত সম্পদ আজ পুঞ্জীভূত হয়েছে। দুঃখের মহাসাগরের মাঝে মাত্র কয়েকটি সমৃদ্ধির দ্বীপ বিশ্বের সামনে একটি হুমকিস্বরূপ হয়ে দাড়িয়েছে। বিশ্বের এই চেহারা পালটিয়ে দিতে হবে বলে তিনি দৃঢ়তার সাথে ঘােষণা করেন। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই প্রথম কমনওয়েলথ অধিবেশনে ভাষণ দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, তার দেশ বর্তমানে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা, স্বাস্থ্যহীনতা ও বেকারত্বের মতাে কঠিন সমস্যার মােকাবিলা করছে। তিনি বলেন, আমাদের ন্যায় অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলােকে এসব মারাত্মক সমস্যার মােকাবিলা করতে হচ্ছে। কিন্তু গণতন্ত্রের কাঠামাের মধ্যে। থেকে এসব চ্যালেঞ্জের মােকাবিলা করা খুবই কঠিন। যেমন কঠিন রাজনৈতিক স্বাধীনতা না হারিয়ে অর্থনৈতিক মুক্তিকে নিশ্চিত করা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের উপস্থিতিতেই অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে সাফল্য অর্জন করা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, কমনওয়েলথে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলাে মনােভাব পাল্টিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলাের প্রয়ােজন মেটানাের ব্যাপারে কমনওয়েলথ একটি বিরাট অবদান সৃষ্টি করতে পারে। যার ফলে উন্নয়নশীল দেশগুলাে ব্যবসা বাণিজ্যে ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সমস্যার সম্মুখীন হবে না। বিশ্বশান্তির পক্ষে জোর দিয়ে বঙ্গবন্ধু প্যারিস চুক্তি কড়াকড়িভাবে বাস্তবায়ন ও কম্বােডিয়ায় বােমাবর্ষণ বন্ধের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যদি এটা না হয় তা হলে এশিয়ার শান্তি অবাস্তব হবে। বঙ্গবন্ধু এই প্রসঙ্গে বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের মুক্তি সংগ্রামের প্রতি তার সমর্থনের কথা ঘােষণা করেন।৭

রেফারেন্স: ৩ আগস্ট ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!