You dont have javascript enabled! Please enable it! 1973.07.26 | যুগােশ্লাভিয়া ও কানাডার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর আজ ঢাকা ত্যাগ | দৈনিক আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

যুগােশ্লাভিয়া ও কানাডার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর আজ ঢাকা ত্যাগ

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজ সকাল সাড়ে আটটায় বাংলাদেশ বিমানের নিজস্ব বােয়িং বিমানে বেলগ্রেড এবং কানাডার উদ্দেশ্যে রাজধানী ঢাকা ত্যাগ করবেন। বিমানবন্দরে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গার্ড অব অনার প্রদান করবেন। বঙ্গবন্ধু আগামী ৩১ জুলাই বেলগ্রেড থেকে রােম হয়ে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলাের রাষ্ট্রপ্রধানদের সম্মেলনে যােগদানের উদ্দেশ্যে কানাডার রাজধানী অটোয়ায় পৌছবেন। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আন্তঃ মহাদেশীয় সফর কালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হােসেন, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব জনাব তােফায়েল আহমেদ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মচারী, কয়েকজন সাংবাদিকসহ একটি শক্তিশালী প্রতিনিধিদল তার সাথে থাকবেন।
বেলগ্রেড সফর তাৎপর্যপূর্ণ : প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জোট নিরপেক্ষ রাষ্ট্রগুলাের অন্যতম যুগােশ্লাভিয়ার রাজধানী বেলগ্রেড সফরকে বিশেষ গুরুত্ব এবং তাৎপর্যপূর্ণ বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করে। একটি সূত্র এই মর্মে আভাস দিয়েছেন যে, পাকিস্তানি যুদ্ধ অপরাধীদের বিচার অনুষ্ঠান, পাকিস্তান কর্তৃক বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতিদান এবং পাকিস্তানে আটক নিরপরাধ বাঙালিদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রশ্নে সম্প্রতি যে অচল অবস্থা দেখা দিয়েছে তার সমাধানের জন্য জোট নিরপেক্ষ রাষ্ট্র বেলগ্রেড সরকার বঙ্গবন্ধুর বেলগ্রেড সফরের সময় বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মধ্যে মতৈক্য সৃষ্টির চেষ্টা করবেন। প্রসঙ্গত উল্লেখযােগ্য যে, বিশ্বের অন্যতম জোট নিরপেক্ষ যুগােশ্লাভিয়ার প্রধানমন্ত্রী কিছুদিন পূর্বে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা সফরে এসেছিলেন। এখানে অবস্থানকালে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রশ্নে বিশেষ করে এই উপমহাদেশের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত আলােচনা করেছেন। প্রকাশ, স্বদেশের উদ্দেশ্যে রাজধানী ঢাকা ত্যাগের প্রাক্কালে যুগােশ্লাভিয়ার প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় তার সফর অত্যন্ত সফল হয়েছে। এমনকি এই উপমহাদেশের মানবিক সমস্যাগুলােসহ বিভিন্ন সমস্যার শান্তিপূর্ণ স্থায়ী সমাধানে বঙ্গবন্ধু এবং যুগােশ্লাভিয়ার প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে নীতিগত কোনাে পার্থক্য ছিল না। উভয় নেতাই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাসী। পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন যে, ঢাকা আলােচনাসূত্র ধরেই যুগােশ্লাভিয়ার নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে বেলগ্রেডে পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর বিচার অনুষ্ঠান, পাকিস্তান কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দান এবং পাকিস্তানে আটক বাঙালিদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রশ্ন নিয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ আলােচনা করবেন। এই উপমহাদেশের বিভিন্ন সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য বেলগ্রেড বঙ্গবন্ধু এবং যুগােশ্লাভিয়ার নেতৃবৃন্দের মধ্যে আলাপ-আলােচনার একটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা। এমনকি এই উপমহাদেশে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত করবে বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন। আর উপরােক্ত কারণেই কমনওয়েলথ সম্মেলনে যােগদানের উদ্দেশ্যে অটোয়ায় যাওয়ার পথে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যুগােশ্লাভিয়ার রাজধানী বেলগ্রেড সফরকে অত্যন্ত গুরুত্ব এবং তাৎপর্যপূর্ণ বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন।
স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পথে লন্ডনে অবস্থান : আগামী ১১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বদেশের উদ্দেশ্যে অটোয়া ত্যাগ করবেন। একটি সূত্র হতে জানা গিয়েছে, স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পথে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাত্র ২ ঘণ্টার জন্য লন্ডনে অবস্থান করতে পারেন।১০০

রেফারেন্স: ২৬ জুলাই ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ