You dont have javascript enabled! Please enable it!

বেলগ্রেড ও কানাডার উদ্দেশে বঙ্গবন্ধুর আগামীকাল ঢাকা ত্যাগ

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটায় বেলগ্রেডের পথে ঢাকা ত্যাগ করবেন। এই আন্তঃমহাদেশীয় সফরকালে বঙ্গবন্ধু বেলগ্রেড হয়ে কমনওয়েলথ রাষ্ট্রপ্রধানদের সম্মেলনে যােগদানের জন্য কানাডার রাজধানী অটোয়ায় যাবেন। বঙ্গবন্ধু আগামী ৩১ জুলাই বেলগ্রেড থেকে রােম হয়ে অটোয়ায় যাবেন। বঙ্গবন্ধুর এই সফরকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হােসেন ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব জনাব তােফায়েল আহমেদ তার সাথে থাকবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। আগামী ১১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু স্বদেশের উদ্দেশ্যে অটোয়া ত্যাগ করবেন। পথে দু’ঘণ্টার জন্য তিনি লন্ডনে অবস্থান করতে পারেন। অটোয়ায় আসন্ন কমনওয়েলথ রাষ্ট্রপ্রধানদের সম্মেলনে বিশ্বের ৩২টি দেশের নেতৃবৃন্দ যােগদান করবেন। বঙ্গবন্ধুর বেলগ্রেডে অটোয়া সফর বিভিন্ন দিক দিয়ে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আলজিয়ার্সে আসন্ন জোটনিরপেক্ষ সম্মেলন এবং জোটনিরপেক্ষ রাষ্ট্রগুলাের মধ্যে স্বাধীন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র যুগােশ্লাভিয়া যেহেতু নেতৃস্থানীয় সেহেতু যুগােশ্লাভিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে বঙ্গবন্ধুর সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বে যুগােশ্লাভিয়াই একমাত্র সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র, যে রাষ্ট্র সত্যিকার জোটনিরপেক্ষ নীতি গ্রহণ করেছে এবং কোনাে বৃহৎ শক্তির লেজুড়বৃত্তি করে না। যুগােশ্লাভিয়ার স্বাধীনতা উত্তরকালে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ও স্বাধীনতার পর অর্থনৈতিক পুনর্গঠনসহ জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যভুক্তি নিয়ে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে আসছে। বেলগ্রেডে বঙ্গবন্ধু যুগােশ্লাভ নেতৃবৃন্দের সাথে আন্তর্জাতিক সমস্যাবলিসহ উপমহাদেশে উদ্ভুত মানবিক সমস্যাবলি নিয়ে আলােচনা করবেন। এছাড়া উভয় দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে আলােচনা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু বেলগ্রেডে আলােচনা শেষে ৩১ জুলাই কানাডার রাজধানী অটোয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন। অটোয়ায় কমনওয়েলথ রাষ্ট্রপ্রধানদের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যােগদান অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এশিয়ার মানচিত্রে এক নজিরবিহীন রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জনকারী বাংলাদেশ কমনওয়েলথের সবচেয়ে নবীন সদস্য। বঙ্গবন্ধুই প্রথম কমনওয়েলথ রাষ্ট্রপ্রধানদের সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে যােগদান করছেন। জোটনিরপেক্ষ নীতি অনুসারী এশিয়ার শান্তিকামী ও শান্তির সংগ্রামরত বাংলাদেশের প্রতি স্বভাবতই সারা বিশ্বের সাগ্রহ দৃষ্টি নিবদ্ধ রয়েছে। বিশেষ করে সাড়ে সাত কোটি সগ্রামী মানুষের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই আন্তঃমহাদেশীয় সফরের মধ্য দিয়ে বিশ্বের এই এলাকায় শান্তি ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির নতুন পথ উন্মুক্ত হবে বলে পর্যবেক্ষক মহলের বিশ্বাস। এই সব কারণে বঙ্গবন্ধুর এই সফর ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।৯৩

রেফারেন্স: ২৪ জুলাই ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!