স্বাধীনতাকে সফল করে তােলার জন্য স্বনির্ভরশীল অর্থনীতি অপরিহার্য
শ্রীমঙ্গল। কৃষিমন্ত্রী জনাব আবদুস সামাদ আজাদ নিষ্ঠার সাথে কাজ করে একটি স্বনির্ভরশীল অর্থনীতি গড়ে তােলার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতাকে সফল করে তুলতে হলে এটা খুবই প্রয়ােজন। মন্ত্রী এখানে আওয়ামী লীগ কর্মীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিচ্ছিলেন। জনাব সামাদ বলেন যে, সাম্রাজ্যবাদী ও ঔপনিবেশিক শক্তিসমূহ কর্তৃক শােষিত হওয়ার ফলে অতীতে আমরা বহু কিছুর অভাব অনুভব করেছি। তিনি বলেন যে, জনগণকে সুখী ও সমৃদ্ধশালী করার জন্য এখন জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবার উচিত সকল ক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধি করা। তিনি বলেন, বিভিন্ন দ্রব্যের জন্য বিদেশের ওপর নির্ভর করা কোনাে স্বাধীন ও সার্বভৌম জাতির পক্ষে মঙ্গলজনক নয়। আমরা সম্মান এবং পদমর্যাদা বৃদ্ধির জন্য বিদেশের ওপর নির্ভরশীলতা অবশ্যই পরিহার করে চলার চেষ্টা করব। তিনি যে কোনাে ত্যাগের বিনিময়ে আওয়ামী লীগ কর্মীগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে বলেন। যে সমস্ত শক্তি আমাদের স্বাধীনতা নস্যাতের জন্য ভেতরে এবং বাহিরে কাজ করছে তাদের প্রতিরােধের জন্য তিনি তাদের সদা জাগ্রত প্রহরীর মতাে সতর্ক থাকতে বলেন। কারণ জাতিকে উন্নত করতে হলে স্বাধীনতার স্থিতিশীলতা অবশ্য প্রয়ােজন। মন্ত্রী মহােদয় ঘােষণা করেন যে, আভ্যন্তরীণ শত্রুদেরকে অবশ্যই নির্মূল করা হবে। ৩০ লক্ষ লােকের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা এসেছে তা কোনাে অবস্থাতেই বিনষ্ট হতে দেয়া হবে না।
ভুট্টোর নীতির নিন্দা : প্রেসিডেন্ট ভুট্টোর সমালােচনা করে তিনি বলেন যে, সে এখনও বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে তালবাহানা করছে। উপমহাদেশে শান্তি স্থাপনের পরিবর্তে বিবাদ জিইয়ে রাখার নীতি গ্রহণ করেছে। জনাব সামাদ ভুট্টোকে সারা উপমহাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য তার অনুসৃত নীতি পরিহার করে স্বাভাবিক সম্পর্ক ফিরিয়ে আনার জন্য আহ্বান জানান। জনাব সামাদ আরও বলেন যে, পাকিস্তান যদি সেটা না করে তবে সে উপমহাদেশে টিকে থাকতে পারবে না। পূর্বাহ্নে মন্ত্রী চা গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন এবং গবেষণাগারের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিজে প্রত্যক্ষ করেন।৬৯
রেফারেন্স: ১৭ জুলাই ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ