You dont have javascript enabled! Please enable it!

মানিকগঞ্জ ট্রেজারির অস্ত্রাগারে রহস্যজনক মাইন বিস্ফোরণ

মানিকগঞ্জ। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় মানিকগঞ্জ ট্রেজারী সংলগ্ন অস্ত্রাগারে এক বিস্ফোরণ ঘটে এবং তার ফলে সেখানে কর্তব্যরত পাঁচ জন পুলিশসহ ৬ জন আহত হয়েছে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাতপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, আহত পুলিশদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা এই সংবাদদাতাকে জানিয়েছেন যে, প্রথম পর পর দুটি গ্রেনেড এবং তারপর একটি মাইন বিস্ফোরিত হয়। তার ফলে সারা শহর থর থর করে। কেঁপে ওঠে এবং ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। আরাে কয়েকটি গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয় বলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে। বিস্ফোরণের শব্দ শুনে শহরের রক্ষী বাহিনী ট্রেজারিতে ডাকাত পড়েছে। মনে করে ইতঃস্তত গুলি ঘুরতে থাকে। তখন জনসাধারণ ভয়ে ছােটাছুটি শুরু করে। বিস্ফোরণের ফলে অস্ত্রাগার ভবন, মুন্সেফকোর্ট, ওয়াপদা ট্রান্সফরমার এবং আশেপাশের অনেক দোকানপাট সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তিন লক্ষাধিক টাকা হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বিস্ফোরণের কারণ জানা যায় নি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য : স্টাফ রিপাের্টার জানিয়েছেন যে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আব্দুল মালেক উকিল বলেছেন, মানিকগঞ্জ ট্রেজারিতে বিস্ফোরণ ঘটেছে। তবে বিস্তারিত তথ্য তিনি এখনাে জানতে পারেন নি। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে আহতদের ভর্তি করা হয়েছে। তবে তাদের অবস্থা জানাতে পারেননি। বিপিআই জানাচ্ছে, আহতদের মধ্যে ৬ষ্ঠ জন হচ্ছে পুলিশ মেসে কাজ করে। বিস্ফোরণের পর মুহূর্তেই সমগ্র মানিকগঞ্জ শহরে জনসাধারণ ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে ছােটাছুটি শুরু করে। নিকটে অবস্থানকারী আনসার বাহিনীর লােকেরা ভয়ে যে যেখানে পারে লুকোতে শুরু করে বলে এক অ্যাডজুটেন্ট জানিয়েছেন। শহরবাসীর অনেকেই নিকটস্থ জলাশয়ে লাফিয়ে পড়েন। অনেকেই প্রাণ ভয়ে গ্রামের দিকে পালাতে থাকেন। মহকুমা প্রশাসক জানিয়েছেন, অস্ত্র-শস্ত্র ও গােলাবারুদ ছাড়া ট্রেজারিতে রক্ষিত জনগণের সম্পত্তির কোনাে ক্ষতি সাধিত হয়নি। ঢাকার কোনাে বিশেষজ্ঞ এ পর্যন্ত মানিকগঞ্জ গিয়ে পৌঁছাননি বলে বিস্ফোরণের কারণ নির্ধারণ সম্ভব হয়নি বলে তিনি জানান।৯৫

রেফারেন্স: ২৪ জুন ১৯৭৩, দৈনিক পূর্বদেশ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!