যুদ্ধবন্দি সমস্যা নিয়ে শীঘ্র বৈঠক হবে- শরণ সিং
হেলসিঙ্কি। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী শরণ সিং এখানে বলেন যে, বৃহৎ শক্তিগুলাে হস্তক্ষেপ না করলে এবং এশিয়ার দেশগুলােকে নিজেদের বিরােধ মীমাংসার ভার নিজেদের হাতে দিলে ইউরােপে বর্তমানে যে উত্তেজনাহীন অবস্থা বিরাজ করছে, অল্প সময়ের মধ্যে এশিয়ায়ও তা সম্ভব হবে। এক সাংবাদিক সম্মেলনে শ্রী সিং বলেন যে, এশিয়ার দুটো এলাকা ইন্দোচীন ও মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজমান এবং ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সম্প্রতি সম্পাদিত সিমলা চুক্তি আংশিকভাবে পালিত হওয়ায় ভারতীয় উপমহাদেশের পরিস্থিতি এখনাে উত্তেজনাপূর্ণ রয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন যে, এ এলাকার শান্তি, নিরাপত্তা ও সহযােগিতা সম্পর্কে ইউরােপীয় দেশগুলাের যে সম্মেলন আগামী মার্চ মাসের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, এশিয়ার বিবদমান দেশগুলাের মধ্যে দ্বন্দ্বের অবসান হলেই শুধু এশীয় দেশগুলােও অনুরূপ সম্মেলনের কথা চিন্তা করতে পারে। তিনি বলেন যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরােপে এই ধরনের সম্মেলন সম্ভব করতে ২৫ বছর সময় লেগেছে। এশিয়ার সশস্ত্র সংঘর্ষের অবসান হয়ে গেলে ঠান্ডা লড়াইও থাকবে না। ফলে আরাে কম সময়ের মধ্যে এশিয়ায় অনুরূপ আঞ্চলিক সম্মেলন করা সম্ভব।
বৈঠকের আশা : তিনি উপমহাদেশে উত্তেজনা হ্রাসে মন্থর গতির জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেন। কিন্তু তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, যুদ্ধবন্দি সমস্যা এবং পাকিস্তানে আটক বাঙালি ও বাংলাদেশে অবস্থানকারী পাকিস্তানিদের নিজ নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে অদূর ভবিষ্যতে পাকিস্তানের সাথে নতুন করে বৈঠক শুরু হবে। শরণ সিং পারস্য উপসাগর অঞ্চলের পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন যে, সংগ্রামের ফলে উক্ত অঞ্চলের পক্ষে যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ রয়েছে। তবে সাধারণভাবে অনুমান করা হচ্ছে যে, ফিনল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ, টি, কারজালেনের সাথে আলােচনার সময় উক্ত দেশগুলাে পরে পাকিস্তানে সামরিক সাহায্য পাঠাতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।৬৭
রেফারেন্স: ১৭ জুন ১৯৭৩, দৈনিক পূর্বদেশ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ