You dont have javascript enabled! Please enable it! 1973.05.27 | সীমিত সম্পদের ভিত্তিতে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে- তাজউদ্দীন আহমদ | দৈনিক পূর্বদেশ - সংগ্রামের নোটবুক

সীমিত সম্পদের ভিত্তিতে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে- তাজউদ্দীন আহমদ

অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমেদ বলেছেন যে, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও সীমিত সম্পদের পরিপ্রেক্ষিতে দেশে পরিকল্পিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এ ব্যবস্থা ছাড়া উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়ে আমাদের এগিয়ে যাওয়া সম্ভবপর হবে না। মন্ত্রী আরাে বলেন যে, বাংলাদেশের সাড়ে ৭ কোটি মানুষকে যে সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তা বাস্তবায়নের সময় এখন এসেছে। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন যে, জাতিগতভাবে সকলের যদি মানসিকতা পরিবর্তনের চেষ্টা না করি তাহলে সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেও কোনাে ফল হবে না। জনাব তাজউদ্দীন আহমদ দেশ ছেড়ে বিদেশ চলে যাওয়ায় পলায়নপর মনােবৃত্তির নিন্দা করেছেন। বাংলাদেশের যেসব নাগরিক দেশ ছেড়ে বিদেশ যেতে আগ্রহী তাদের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেন যে, অধিকতর সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য বিদেশে না গিয়ে দেশে থেকে কাজ করে সুযােগ সুবিধার সৃষ্টি করে নিন। রবিবার অর্থমন্ত্রী কারিগরি মিলনায়তনে বাংলাদেশ ঠিকাদার সমিতির প্রথম জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণ দিচ্ছিলেন। বিরােধী দল প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে, সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরােধীদলই বিকল্প সরকার বিরােধী দলগুলােকে এমন হতে হবে যেন তারা জনগণের পূর্ণ আস্থা লাভ করতে পারে। তা না হলে দেশের জনগণ হতাশার শিকার হবে। মন্ত্রী বলেন যে, বাংলাদেশের জনগণের নৈরাজ্যের শিকারে পরিণত করার অধিকার কোনাে বিরােধী দলের নেই। দেশের সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন যে, গত দুই যুগের আন্দোলনের বিচার বিশ্লেষণ করে বাংলার মানুষ এই রায় দিয়েছেন যে, সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি এই দেশের জন্য উপযােগী। তিনি মত প্রকাশ করেন যে, সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের সর্বাপেক্ষা মঙ্গল সাধিত হতে পারে। আওয়ামী লীগের ঘােষণাপত্রেও অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে এ দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কি হবে সে সম্পর্কে স্পষ্ট বক্তব্য দেয়া ছিল। অর্থমন্ত্রী বলেন যে, জাতীয় ঐক্যের খাতিরে দুর্দিনেও আওয়ামী লীগ ধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার সাথে আপােষ করেনি। জনাব তাজউদ্দীন আরাে বলেন যে, সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সামনে রেখেই আওয়ামী লীগ সংগ্রাম করেছে। তিনি জানান যে, বাংলার মানুষকে শােষণের হাত থেকে রক্ষা করার জন্যই আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্ববর্তী সংগ্রাম পরিচালনা করেছিল। তিনি বলেন যে, এখন স্বাধীন দেশের নাগরিকদের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য বর্তমানে সংগ্রাম পরিচালনা করতে হবে।১০৯

রেফারেন্স: ২৭ মে ১৯৭৩, দৈনিক পূর্বদেশ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ