You dont have javascript enabled! Please enable it!

জনগণের দুর্দশা লাঘব হােক- মওলানা ভাসানী

ঢাকা। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী আজ ঘােষণা করেন যে, লাখাে লাখাে মজলুম মানুষের। দুঃখ দৈন্য লাঘবের জন্যই তিনি আমরণ অনশন করেছেন। তিনি দুঃখী মানুষের সুখ, সমৃদ্ধি এবং মৃত্যুর পর নিজের আত্মার সদগতির জন্য মােনাজাত করেন। আজ বিকেলে এনার প্রতিনিধির কাছে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে তিনি এটাকে তাঁর অন্তিম বাণী বলে দাবি করেন। মওলানা সাহেব বলেন যে, এদেশে নির্ভেজাল সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মধ্যেই লাখাে লাখাে মজলুম মানুষের মুক্তি নিহিত রয়েছে বলে তার দৃঢ় বিশ্বাস। তিনি বলেন যে, অন্য কোনাে সামাজিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় জনগণের মুক্তি আসতে পারে না। পল্লীর বিপুল সংখ্যক মানুষের দুঃখ দৈন্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন যে, গত দুমাস ধরে তাদের পক্ষে দুবেলা দুমুঠো অন্নের সংস্থান করা অত্যন্ত দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। মওলানা সাহেব অভিযােগ করেন যে, ক্রমাগত রুটি বা আটা গােলা খেয়ে এদের অনেকেই আমাশয়ে ভুগছে। মওলানা ভাসানী আরাে অভিযােগ করেন যে, কাপড়ের অভাবে পল্লী বধূদের এখন চট পরে লজ্জা নিবারণ করতে হচ্ছে।
ভাসানী-ন্যাপ প্রধান বলেন যে, বাংলাদেশে প্রায় দুর্ভিক্ষ অবস্থা বিরাজ করছে। তিনি অভিযােগ করেন, কাউকেই অনাহারে মরতে দেয়া হবে না বলে সরকার দাবি করলেও বাস্তবে বহু লােক না খেয়ে। মরছে। বয়ােবৃদ্ধ নেতা ভুলত্রুটির জন্য সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং কোনাে দায়দায়িত্ব থাকলে তা মাফ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে আবেদন জানান। পরিশেষে সন্তোষ বিশ্ববিদ্যালয়, মহীপুর হাজী মহসিন কলেজ, চিত্তরঞ্জন একাডেমী, এ কে ফজলুল হক হাসপাতাল, নজরুল ইসলাম গবেষণা ইনষ্টিটিউট, কাগমারী কলেজ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে তাঁর অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য উদার হস্তে চাঁদা দানের উদ্দেশ্যে তিনি অবস্থাপন্ন ব্যক্তিদের প্রতি আবেদন জানান। তিনি বলেন যে, মৃত্যুর পর তার অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করা হলে তাঁর আত্মা শান্তি পাবে।৭৬

রেফারেন্স: ১৯ মে ১৯৭৩, দৈনিক পূর্বদেশ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!