পর্যটন শিল্প উন্নয়নের জন্য ২৮ কোটি টাকার পরিকল্পনা
বাণিজ্য, বহির্বাণিজ্য ও পর্যটনমন্ত্রী জনাব এ এইচ এম কামারুজ্জমান বলেছেন যে, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন দেশের পর্যটন শিল্প উন্নয়নের জন্য ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি পাঁচসালা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। মন্ত্রী বলেছেন, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং দেশের সংস্কৃতি সভ্যতা বিদেশিদের সামনে তুলে ধরার উদ্দেশ্যেই দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নতি করা হচ্ছে। বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মন্ত্রী এ তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি আরাে বলেন যে, কর্পোরেশন একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে এবং সে অনুসারে কর্পোরেশন দেশের পাঁচটি পর্যটন অঞ্চলকে হাতে নিয়ে মহাপরিকল্পনার ভিত্তিতে তার উন্নয়ন করা হবে। মন্ত্রী বলেন যে, পর্যটন কর্পোরেশন গত বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে দেড় কোটি টাকা আয় করেছে এবং অল্পদিনের মধ্যে তিন কোটি টাকা অর্জন করবে। পর্যটন মন্ত্রী আরাে বলেন যে, কর্পোরেশন ইতােমধ্যে একটি ক্র্যাশ প্রােগ্রাম হাতে নিয়েছে এবং তার মাধ্যমে অক্টোবর মাসে পর্যটন মৌসুম শুরু হবার পূর্বেই কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র কিছু অত্যাবশকীয় সুযােগ সুবিধা দেবে। এই কেন্দ্রগুলাে হচ্ছে কক্সবাজার, কাপ্তাই, রাঙামাটি, চট্টগ্রাম ও ঢাকা। এতে ১ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয় হবে। মন্ত্রী বলেন যে, ক্র্যাশ প্রােগ্রাম বাস্তবায়িত হলে বছরে পাঁচ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যাবে। তিনি আরাে বলেন যে, কর্পোরেশন ২৮ কোটি টাকার যে প্রথম পাঁচসালা পরিকল্পনা নিয়েছে সে অনুসারে ঢাকায় ১৫০ কক্ষবিশিষ্ট পাঁচতারা হােটেল এবং কক্সবাজারে ১০০ কক্ষবিশিষ্ট পাঁচতারা হােটেল, ঢাকায় আরেকটি ১০০ কক্ষবিশিষ্ট হােটেল, কক্সবাজার, সিলেট, রাজশাহী, দাউদকান্দি, রাঙামাটি ও পাহাড়পুরে মােট ২৭৫টি হােটেল, কক্সবাজার, রাঙামাটি ও সুন্দরবন অঞ্চলে ৩৩টি কটেজ, কক্সবাজার, রাঙামাটি, কুয়াকাটা ও রামসাগরে মােট ২৫০ কক্ষবিশিষ্ট বহু বিছানাযুক্ত কেন্দ্র, প্রায় ২০০টি সড়ক পরিবহন, ২৫টি জলপরিবহন, বিভিন্ন ধরনের ৩০০টি নৌকা, ঢাকায় একটি মিলনায়তন, ১টি ল্যানেটোরিয়াম এবং রাঙামাটি অথবা কাপ্তাইয়ে একটি গলফ পর্চের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন যে, কর্পোরেশন যে পাঁচটি পর্যটন অঞ্চলের উন্নয়ন হাতে নিয়েছে তা হলাে কক্সবাজার হতে টেকনাফ পর্যন্ত সৈকত, কাপ্তাই-রাঙ্গামাটি-রামগড় ও অন্যান্য অঞ্চল, খুলনা থেকে সুন্দরবন অঞ্চল, সিলেটের চা বাগান, হাওড় এবং পাহাড়পুর, মহাস্থানগড়, রাজশাহী, দিনাজপুর ও রংপুরে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও ঐতিহাসিক স্মৃতিসৌধ। জনাব কামারুজ্জামান আরাে বলেছেন যে, এছাড়া কর্পোরেশন বিশ থেকে ত্রিশটি পর্যটন ক্ষেত্র গড়ে তুলবে। কর্পোরেশন ঢাকা ও চট্টগ্রামে চারটি পরিত্যক্ত হােটেলের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বভার নিয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। এ হােটেলগুলাে হলাে ঢাকার হােটেল ইলিশিয়াম, রুচিতা রেস্তোরা, চট্টগ্রাম হােটেল, সেলিম হােটেল ও খুলনার আফগান হােটেল। উল্লেখ্য, হােটেল ইলিশিয়াম পাকিস্তানি দালাল কাজী কাদের তৈরি করেছিলেন। বর্তমানে এটি মেরামত করতে মােট এক কোটি টাকা। লাগবে। মন্ত্রী বলেছেন যে, এর জন্য বিদেশ থেকে ৭০ লাখ টাকা সাহায্য নেয়া হবে।৩৪
রেফারেন্স: ৯ মে ১৯৭৩, দৈনিক পূর্বদেশ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ