ভূমিহীন চাষীদের মধ্যে জমি বণ্টন শুরু
ঢাকা। ভূমি প্রশাসন ও রাজস্ব মন্ত্রী জনা আবদুর রব সেরনিয়াবত আজ বাসস এর এক সাক্ষাৎকারে বলেন যে, সরকার ভূমিহীন চাষীদের মধ্যে পাঁচ লাখ ৩৩ হাজার জমির একর বণ্টনের কাজ শুরু করেছে। সরকারের ভূমি সংস্থার কর্মসূচির অংশ হিসেবেই এই বণ্টন কার্যক্রম গৃহীত হয়েছে। মােট জমির মধ্যে ৪ লাখ ৬২ হাজার একর খাস সীমার উর্ধ্বে সকল জমি এখনাে সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি বলে মন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সত্য উদঘাটনের জন্য ১ এপ্রিল থেকে তদন্ত কার্য শুরু হয়েছে। উল্লেখযােগ্য যে, নির্ধারিত সীমার উপরি জমি সর্বশেষ ৩১ মার্চের মধ্যে সরকারের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। মন্ত্রী বলেন, ব্যক্তিগত পর্যায়ে চাষাবাদ করার জন্যে প্রত্যেক পরিবারকে দেড় একর এবং যারা সমবায় গঠন করবেন তাদের প্রত্যেক পরিবারকে আড়াই একর জমি দেয়া হবে। তিনি বলেন, সমবায় গঠনকারী পরিবারদের কাছ থেকে অর্ধ একর জমি সেলামী নেয়া হবে। এই জমিটুকুতে বাড়িঘর তৈরি করা চলবে। স্থানীয় ভিত্তিতে যে হারে জমি বেচাকেনা চলে তারা মাত্র অর্ধেক সেলামি হিসেবে দিতে হবে। মােট দেয়া অর্থ দশ কিস্তিতে পরিশােধ করতে হবে। বাকি দুই একর জমির কোন মূল্য দিতে হবে না। মন্ত্রী বলেন, কোন পরিবার তাদেরকে দেয়া জমি ১৫ বছরের মধ্যে বিক্রয় করতে পারবে না। তিনি বলেন, পূর্ববর্তী ব্যবস্থাধীনে সরকার প্রতিবছর ৮ কোটি টাকার ভূমি রাজস্ব পেতেন। কিন্তু বর্তমানে ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মওকুফ করে দেয়ার ফলে এই রাজস্বের পরিমাণ দাঁড়াবে বছরে মাত্র এক কোটি টাকা। সীমার উর্ধ্বে যাদের জমি রয়েছে সেগুলাে নিয়ে বিতরণ করে দেয়ার ফলে সরকার কি পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে জানতে চাওয়া হলে জনাব সেরনিয়াবত বলেন, তার দফতরের পক্ষ থেকে বিষয়টি ঘেঁটে দেখা হচ্ছে। তবে বর্তমান ভূমি সংস্কার ব্যবস্থায় ছােট ছােট কৃষক তাদের জমিতে আগ্রহ এবং উদ্দীপনা নিয়ে চাষাবাদ করবেন। ফলে সার্বিকভাবে দেশ লাভবান হবে বলে মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।১৬
রেফারেন্স: ৫ মে ১৯৭৩, দৈনিক পূর্বদেশ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ