উপমহাদেশে শান্তি স্থাপনে বঙ্গবন্ধু বলিষ্ঠ ভূমিকা নেবেন, দিল্লি মহলের ধারণা
নয়াদিল্লি। ধারণা করা হচ্ছে যে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই উপমহাদেশের তিন দেশের মধ্যে সম্পর্ককে স্বাভাবিক করে তােলার ব্যাপারে কিছু বলিষ্ঠ ভূমিকা নিতে পারেন। যুদ্ধবন্দি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও পাকিস্তানে জোর করে আটকে রাখা বাঙালি ও বাংলাদেশে অস্থানীয়সহ বিভিন্ন পােস্টে বাংলাদেশ তার পূর্বনীতি থেকে সরে আসেনি, তবে প্রয়ােজন হলে অচলাবস্থার অবসান ঘটানাের জন্য বাংলাদেশ কম অনমনীয় মনােভাব দেখাতে পারে। বলে আশা করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারত এই উপমহাদেশের তিন দেশের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে।
অচলাবস্থা অবসানের জন্য ব্যাপক কূটনৈতিক কার্যক্রম নিতে পারে। এই তিন দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ব্যাপারে ফলপ্রসূ উদ্যোগ নেয়ার জন্য ভারত-বাংলাদেশের যৌথ রণনীতি গ্রহণের উদ্দেশ্যে শ্রীমতী গান্ধীর বিশেষদৃত শ্রী হাসারের মিশন সফল হয়েছে বলে নয়াদিল্লিতে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছেন। ঢাকা সফরের যথেষ্ট তাৎপর্য রয়েছে এবং ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তিন দেশের গঠনমূলক বৈঠকের সূত্রপাত ঘটানাের জন্যে কার্যকরি রণনীতি নেয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল পাকিস্তানকে যুদ্ধবন্দিদের ফিরিয়ে দেয়ার সম্পর্কে বাংলাদেশ ও ভারতে মতৈক্যের সম্ভাবনার ব্যাপারে প্রকাশ্যভাবে আলােচনা করছেন। সম্ভবত বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের তালিকা চূড়ান্ত করেছে এবং তাদের ঢাকায় নিয়ে আশা হবে। কূটনৈতিক মহল বলেছেন, যুদ্ধবন্দি বিষয়ে যদি তিন দেশ মধ্যে ঐক্যবদ্ধ হয় তবে পাকিস্তানে আটক বাঙালিদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারেও সমঝােতায় পৌছানাে যেতে পারে। পাকিস্তান থেকে বাঙালিদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থাও হতে পারে। জল্পনা কল্পনা চলছে যে, শ্রী হাকসার ঢাকা থেকে এসেই তিন দেশের বৈঠকের তারিখ নির্ধারণের জন্যে ইসলামাবাদ যাবেন। সরকারি মহল তাকে গুজব বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন। আরাে আশা করা যাচ্ছে যে, যুদ্ধবন্দি এবং পাকিস্তানে আটক বাঙালিদের ব্যাপারে সমঝােতায় পৌছানাে গেলে পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে পারে।১৯
রেফারেন্স: ৫ এপ্রিল ১৯৭৩, দৈনিক সংবাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ