বিরােধী দলের যেসব নেতা পরাজিত হলেন
বাংলাদেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে বিভিন্ন বিরােধী দলীয় প্রধানসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেছিল। কিন্তু এবারের নির্বাচনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলাে এই যে, বাংলা জাতীয় লীগ প্রধান আতাউর রহমান খান ছাড়া বিরােধী দলীয় প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ সব নেতাই আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ধরাশায়ী হয়েছেন। পরাজিত বিরােধী দলীয় নেতাদের মধ্যে রয়েছেন ন্যাপ প্রধান অধ্যাপক মােজাফফর আহমদ, সাবেক গণপরিষদ সদস্য ও মাে: ন্যাপ নেতা সুরঞ্জিত সেন। গুপ্ত, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের প্রধান অবসর প্রাপ্ত মেজর এম, এ, জলিল, প্রবীণ লেনিনবাদী কমিউনিস্ট নেতা হাজী মাে. দানেশ, ভাসানী ন্যাপ নেতা ড. আলীম আল রাজী, জাতীয় লীগের সাধারণ সম্পাদক অলি আহামদ, ভাসানী ন্যাপ নেতা রাশেদ খান মেনন, ভা, ন্যাপ নেতা কাজী জাফর আহমদ, জাসদ নেতা শাহজাহান সিরাজ।
ন্যাপ প্রধান মােজাফফর আহমদ কুমিল্লার দু’টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি ভােট গণনার প্রথম দিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সঙ্গে অগ্রগামী থাকলেও শেষ পর্যন্ত অধ্যাপক সাহেব বিপুল ভােটের ব্যবধানে পরাজিত হন। ভাসানী ন্যাপ নেতা ড. আলীম আল রাজী তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে টাঙ্গাইলের একটি আসনে তিনি তার প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সঙ্গে জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও ভােট যুদ্ধে কুপােকাত হন। মাে. ন্যাপ নেতা সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত সিলেটের একটি মাত্র আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং ওই একটি আসনেই তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আবদুস সামাদের সঙ্গে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সক্ষম হন। কিন্তু শেষাবধি তাকেও অন্যান্য বিরােধীদলের নেতাদের মতাে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সঙ্গে করুণ পরাজয় বরণ করতে হয়। ভা, ন্যাপ নেতা রাশেদ খান মেনন একটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও সামান্য ভােটের ব্যবধানে আওয়ামী প্রার্থীর নিকট হেরে যান। গত সত্তরের নির্বাচনেও তিনি সামান্য ভােটের ব্যবধানে নির্বাচিত হতে পারেননি। প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা হাজী মােহাম্মদ দানেশ, জাতীয় লীগ নেতা অলী আহাদ, ভা: ন্যাপ নেতা কাজী জাফর আহমদ এবং জাসদ নেতা শাহজাহান সিরাজ মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতার ধারে কাছে যেতে পারেননি। তাদের সবার চেয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিপুল ভােটাধিখ্যে বিজয়ী হন। শ্রমিক-কৃষক সমাজবাদী দলের প্রধান জনাব সাইফুর রহমান খানও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে গিয়েছেন। বরিশাল জেলার আসনে তার বিপরীতে জয়ী হয়েছে। আওয়ামী লীগের তরুণ নেতা জনাব আমির হােসেন।৩৪
রেফারেন্স: ৯ মার্চ ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ