সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্যই নির্বাচন দিয়েছি—বঙ্গবন্ধু
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যশােরের নড়াইল ও ঝিনাইদহের বিশাল জনসভায় ভাষণ দানকালে বলেন, গণপ্রতিনিধিদের দ্বারা পরিচালিত হয়ে দেশ যাতে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়। প্রতিষ্ঠিত হতে পারে এ জন্য তিনি নির্বাচন অনুষ্ঠিত করছেন। প্রধানমন্ত্রী উপরের দুটি শহরের দুটি স্মরণাতীত কালের বৃহত্তম জনসভায় ভাষণ দানকালে নির্বাচন তথা জনগণের অধিকারের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন, দেশে একটি শাসনতন্ত্র ও নির্বাচন দিয়ে তিনি জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চান। প্রধানমন্ত্রীর এই সভাগুলােয় নারী ও শিশুসহ সমাজের সর্বস্তরের লােকের সমাবেশ হয়। বঙ্গবন্ধুর উভয় সভাগুলােতেই বারবার স্লোগান উচ্চারিত হচ্ছিল “জয় বাংলা” “বঙ্গবন্ধু জিন্দাবাদ” “মুজিববাদ জিন্দাবাদ” “বঙ্গবন্ধু যেখানে আমরা আছি সেখানে” ও “তােমার আমার মার্কা- নৌকা নৌকা।” বঙ্গবন্ধু জনগণ তাকে চায় কি না একথা জিজ্ঞাস করলে জনগণ উল্লাসে হাত তুলে জানিয়ে দেন, “হ্যা, বঙ্গবন্ধু আমরা তােমাকে চাই”। প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়ভাবে ঘােষণা করেন, নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে এবং জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়ােগ করতে পারবে। তিনি বলেন, দেশকে সুখী-সমৃদ্ধশালী করে গড়ে তুলতে হলে জনগণকে অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। বঙ্গবন্ধু আরাে বলেন যে, তিনি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেননি, জনগণের অধিকার আদায়ের জন্যই কঠোর সংগ্রাম করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আসন্ন নির্বাচন বানচালকারী ও সমাজবিরােধী দুষ্কৃতিকারীদের সম্পর্কেও জনগণকে সতর্ক করে দিয়ে দুষ্কৃতিকারীদের খুঁজে বের করার জন্য রক্ষীবাহিনী ও পুলিশবাহিনীকে নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, প্রয়ােজন হলে সেনাবাহিনী নিয়ােজিত করা হবে। বঙ্গবন্ধু বলেন, সমাজ থেকে যাবতীয় দুর্নীতি, ঘুষ ও অবিচার উচ্ছেদ করতেই হবে।৮১
রেফারেন্স: ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৩, বাংলার বাণী
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ