জাতীয় স্বার্থ বিকিয়ে বিদেশী সাহায্য নেবাে না- বঙ্গবন্ধু
‘ত্যাগ’ ও তিতিক্ষা আর চরম আত্মদানের সুমহান আদর্শ স্থাপন করে বাংলার মানুষ যে স্বাধীনতা অর্জন করেছে সে কষ্টার্জিত স্বাধীনতা নস্যাৎ করার জন্য এ দেশের কতিপয় লােক তাদের বিদেশি প্রভুদের নির্দেশে এক অশুভ তৎপরতায় মেতে উঠেছে। স্বাধীন বাংলার জাগ্রত জনতা মিলিতভাবে। তাদেরকে মােকাবিলা করবে। দীর্ঘ ৯ মাসের স্বাধীনতা সংগ্রামকালে বর্বর পাকিস্তানিরা আমার ৩০ লাখ লােককে হত্যা করেছে, মা-বােনদের ইজ্জত নষ্ট করেছে, ধন-সম্পদ সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে সােনার বাংলাকে শ্মশান বাংলায় পরিণত করেছে। আমার বাংলার মানুষ আজ খাদ্যাভাবে দুর্দশাগ্রস্ত,। আমি সাধ্যমত চেষ্টা চালাচ্ছি প্রতিটি মানুষের মুখে প্রশান্তি আর তৃপ্তির হাসি ফোটাতে। কিন্তু জাতীয় স্বার্থ আর স্বাধীনতার বিনিময়ে প্রসারিত কোন বিদেশি সাহায্য আমি গ্রহণ করব না। স্বাধীন বাংলার জনক শেখ মুজিবুর রহমান টাঙ্গাইল আর ময়মনসিংহে তার দুদিনব্যাপী গণসংযােগ সফরের শেষ দিনে নেত্রকোনা আর কিশােরগঞ্জে বিশাল জনতার উদ্দেশ্যে তেজোদৃপ্ত কণ্ঠে উপরােক্ত ঘােষণা করেন। বঙ্গবন্ধু বলেছেন, ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বিদেশিদের দ্বারে দ্বারে হাত পাতার মধ্যে কোন মর্যাদা নেই। এই অকল্যাণকর মর্যাদাহানিকর ট্রেডিশনের অবসান ঘটাতে হবে। আমার দেশের জাগ্রত জনতার মিলিত প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে প্রত্যয়দৃপ্ত কণ্ঠে তিনি ঘােষণা করেছেন, শ্মশান বাংলার মানুষকে আর কোন দিনও পরমুখাপেক্ষী হতে হবে না। তাদের মুখে অরুণােদয়ের সােনালী কিরণ প্রতিফলিত হতে দেরি হবে না যদি আমরা আজ থেকে পূর্ণ উদ্যমে জাতীয় পুনর্গঠনে সংগ্রামে নেমে যাই।৫৩
রেফারেন্স: ১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৩, বাংলার বাণী
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ