পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে দুদেশের মৈত্রী বন্ধন চির অটুট থাকবে
তথ্য ও বেতার মন্ত্রী জনাব মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন যে, ন্যায়ের সংগ্রাম ও ত্যাগের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। তিনি বলেন, দুদেশের স্বাধীনতার প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে এই সম্পর্ক চিরকাল অটুট থাকবে এবং দিন দিন তা দৃঢ়তর হবে। জনাব মিজান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ সফররত ভারতের আনন্দ বাজার পত্রিকার সম্পাদক শ্রী অশােক সরকার ও শ্রীমতী অশােক সরকারের সম্মানার্থে সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি হােটেলে তারই প্রদত্ত ভােজসভায় ভাষণদান করছিলেন। মন্ত্রী মহােদয় প্রসঙ্গত বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর আমাদের দুদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনে আর কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। তিনি বলেন, পাকিস্তানি শাসনামলে দুদেশের মধ্যে তিক্ততার সৃষ্টি করে রাখার জন্য সুকৌশলে সাম্প্রদায়িকতার বীজ ছড়ানাে হয়েছিলাে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য। জনাব মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, বাংলার মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধে তাদের রক্ত দিয়ে প্রমাণ করেছেন যে, শুধু ধর্মের ভিত্তিতে কোন রাষ্ট্র হতে পারে না। তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আদর্শ ও নীতির মিল রয়েছে বলেই দুদেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এত শক্তিশালী। তিনি ঘােষণা করেন যে, শান্তিপূর্ণ সহ-অবস্থান এবং বিশ্ব শান্তির জন্য বাংলাদেশ ও ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাবে। তথ্যমন্ত্রী স্বাধীনতা যুদ্ধে এবং স্বাধীনতা লাভের পর জাতীয় পুনর্গঠনের কাজে ভারত সরকার ও জনগণ যে সাহায্য ও সহযােগিতা দান করেছে তা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। জনাব মিজান চৌধুরী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে ভারতের পত্রপত্রিকা বিশেষ করে আনন্দ বাজার পত্রিকার গৌরবােজ্জ্বল ভূমিকার কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন। পরিশেষে তিনি পরস্পরকে জানার জন্য ভারতের সাংবাদিক সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীদের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।১০১
রেফারেন্স: ২৭ জানুয়ারি ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ