জাতীয় পুনর্গঠনে আত্মনিয়ােগ করাে- মুক্তিযােদ্ধাদের প্রতি বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান সােমবার মুক্তিযােদ্ধাদেরকে দেশের উন্নতি ও জাতীয় পুনর্গঠনের কাজে আত্মনিয়োগের উপদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশের মুক্তি সংগ্রামে তারা যে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে লড়াই করেছিল, জাতি তার জন্যে গর্বিত। তিনি বলেন যে, দেশের স্বাধীনতা রক্ষা এবং জনগণের কল্যাণের জন্যেও প্রাক্তন মুক্তিযােদ্ধাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। দুদিনব্যাপী সম্মেলন শেষে মুক্তিযােদ্ধারা গণভবনে গেলে বঙ্গবন্ধু তাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব জনাব তােফায়েল আহমেদ ও অভ্যর্থনা কমিটির চেয়ারম্যান জনাব ওবায়দুর রহমান সেই সময় উপস্থিত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু যখন গণভবন কমপাউন্ডে প্রবেশ করেন তখন মুক্তিযােদ্ধারা তাকে ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে স্বাগত জানান। সব সময় মুক্তিযােদ্ধারা বঙ্গবন্ধুর সাথে আছেন একথা তারা বিভিন্ন শ্লোগানে জানিয়ে দেয়। স্বাধীনতা উত্তর দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা পর্যালােচনা করে বঙ্গবন্ধু বলেন যে, জাতি পুনর্গঠনের দায়িত্ব তােমাদের উপর বর্তেছে। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু প্রাক্তন মুক্তিযােদ্ধাদের পুনর্বাসনের জন্যে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের দিকে লক্ষ্য রেখে প্রকৃত মুক্তিযােদ্ধাদের একটা তালিকা প্রস্তুত করার জন্য উপদেশ দিয়েছেন। যারা প্রকৃত মুক্তিযােদ্ধা তাদের পুনর্বাসন দিতে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তিনি জানান সরকার পুলিশ, রক্ষীবাহিনী এবং ভােগ্যপণ্য কর্পোরেশনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১ লক্ষ মুক্তিযােদ্ধার কাজের সংস্থান করেছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন যে, এক শ্রেণির লােক নিজেদেরকে মুক্তিযােদ্ধা পরিচয় দিয়ে অসামাজিক কাজে লিপ্ত থেকে প্রকৃত মুক্তিযােদ্ধার স্বর্ণোজ্জ্বল ইতিহাসকে ম্লান করে দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন যে, এই সব সমাজ বিরােধীদের উৎখাত করার জন্যে তােমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসাে।৮১
রেফারেন্স: ২২ জানুয়ারি ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ