You dont have javascript enabled! Please enable it!

সবুজ বিপ্লবের লক্ষ্যে পৌঁছানাের জন্যে আত্মনিয়ােগের আহ্বান রাষ্ট্রপ্রধান

ময়মনসিংহ। রাষ্ট্রপ্রধান আবু সাঈদ চৌধুরী দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে কৃষি ব্যবস্থায় আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ করে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে আহ্বান জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদেরকে তাদের ভূমিকা স্মরণ করে দেন যে, তাদেরকে দেশের কৃষক শ্রেণির প্রতি তাদের মনােভাব পরিবর্তন করে গ্রামে গিয়ে তাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজে নামতে হবে। তবেই সবুজ বিপ্লবের লক্ষ্যে পৌঁছানাে যাবে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে আজ দুপুরে চ্যান্সেলার বিচারপতি চৌধুরী ভাষণ দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, দেশ আজ তীব্র খাদ্য সমস্যার মুখােমুখি এবং তা সমাধান করতে কৃষি ব্যবস্থায় আধুনিক যন্ত্র এবং আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। এই জন্যে তিনি দেশের কৃষি ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণের জন্য কৃষিবিজ্ঞানী ও কৃষিবিজ্ঞানের ছাত্রদেরকে উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে আত্মনিয়ােগ করতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কৃষিব্যবস্থা পৃথিবীর সবচাইতে সেকেলে ধরনের ব্যবস্থা। আমরা যদি এর অগ্রগতি সাধন করতে চাই তাহলে এই ব্যবধান ঘােচাতে হবে। কৃষি হলাে আমাদের জাতীয় অর্থনীতির মেরুদণ্ড। কাজেই পুরাতন কৃষি ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ছাড়া জাতীয় জীবনের কোন ক্ষেত্রেই আমারা অগ্রগতির আশা করতে পারি না বলে তিনি উল্লেখ করেন। দেশে কৃষক শ্রেণির প্রতি শীতল মনােভাব ত্যাগ করার জন্যে তিনি কৃষি বিজ্ঞানের ছাত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন যে, তাদের অবশ্যই গ্রামে গিয়ে কৃষকদের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে কাজে নামতে হবে। আমরা যেন খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ হতে পারি তার জন্যে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে চেষ্টা করতে হবে। এখনি আমরা দেশে সবুজ বিপ্লব আনার লক্ষ্যে পৌছাতে পারব বলে তিনি জানান। রাষ্ট্রপ্রধান বলেন যে, সরকার কৃষিকর্মের সমস্যাগুলাে সম্পর্কে সজাগ রয়েছেন এবং সবুব বিপ্লব আনার জন্যে যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। তিনি এ ব্যাপারে কৃষি বিজ্ঞানী এবং কৃষি বিজ্ঞানের ছাত্রদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি দুঃখ করে বলেন যে, অতীতে পাকিস্তানি শাসকরা বাংলাদেশের প্রতি সম্পূর্ণ উদাসীন ছিল। বিশেষ করে কৃষি ও শিক্ষা উন্নয়নে একেবারে উপেক্ষা দেখিয়েছে। আমরা তা কাটিয়ে উঠে সােনার বাংলা গড়ে তােলার জন্য এগিয়ে যাব।
সমাবর্তনের শুরুতে ছাত্র অসন্তোষ : বাসস পরিবেশিত খবরে প্রকাশ, সমাবর্তনের শুরুতে কৃষি গ্রাজুয়েটরা তাদের ডিপ্লোমায় ভুলত্রুটির অভিযােগ করে অসন্তোষ প্রকাশ করছিলেন কিন্তু ভাইস চ্যান্সেলর ড. রহিম এসে তাদের আশ্বাস দেবার পর শান্ত হন। তারপর আড়াই ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠান চলাকালে আর কোন বাধা বিঘ্ন সৃষ্টি হয় নাই।২

রেফারেন্স: ১ জানুয়ারি ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!