You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.02.29 | রাশিয়া যাবার প্রাক্কালে বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধু | দৈনিক আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

রাশিয়া যাবার প্রাক্কালে বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধু

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে রাশিয়া যাত্রার প্রাক্কালে মঙ্গলবার ঘোষণা করেন যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সোভিয়েত জনগণ ও সরকার যে সমর্থন দিয়েছেন সেজন্যে সাড়ে সাত কোটি বাঙালি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, আমি রাশিয়ার জনগণের জন্যে বাংলাদেশের জনগণের অকৃত্রিম শুভেচ্ছা বহন করে নিয়ে যাচ্ছি। রাত আটটায় এরোফ্লোটের একখানি বিশেষ বিমানে বঙ্গবন্ধু মস্কোর উদ্দেশ্যে তেজগাঁও বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। সোভিয়েত ইউনিয়নে তিনি চারদিন সফর করবেন।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটা বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিদেশ সফর। এর আগে তিনি একবার কোলকাতা সফর করেন। বিমানে আরোহনের পূর্বে সাংবাদিকদের সাথে সংক্ষিপ্ত আলোচনাকালে বঙ্গবন্ধু বলেন, সোভিয়েত জনগণ ও সরকারের জন্য তিনি বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছার বাণী নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন যে, সোভিয়েত সরকার ও জনগণ বাংলাদেশে স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় যে সমর্থন দিয়েছেন সে জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।
বঙ্গবন্ধু কালো রং-এর মুজিব কোট পরে বিমানে প্রবেশের পূর্ব মুহূর্তে স্বকন্ঠে ‘জয় বাংলা’, ‘বাংলাদেশ-সোভিয়েত ইউনিয়ন মৈত্রী দীর্ঘজীবি হোক’ স্লোগান উচ্চারণ করেন এবং বিমান বন্দরে উপস্থিত বিরাট জনতা আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে তার প্রতিধ্বনি তোলান।
অন্যরা যারা যাচ্ছেনঃ প্রধানমন্ত্রীর সাথে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আবদুল সামাদ আজাদও একই বিমানে মস্কো যাত্রা করেছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব জনাব তোফায়েল আহমেদ এম, সি, এ, বঙ্গবন্ধুর পুত্র শেখ কামাল, পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান ড. নুরুল ইসলাম, পররাষ্ট্র সচিব জনাব এস, এ করীম, অর্থসচিব জনাব মতিউল ইসলাম, পররাষ্ট্র দরফতের ডিরেক্টর জেনারেল জনাব কিবরিয়া ও প্রধান প্রটৌকল অফিসার জনাব ফারুক আহমেদ চৌধুরীও প্রতিনিধি দলে রয়েছেন।
প্রারম্ভে প্রধানমন্ত্রী বিমান বন্দরে উপস্থিত হলে তাঁকে এক বিরাট হর্ষোৎফুল জনতা বিদায় সম্বর্ধনা জ্ঞাপন করেন। অনেকে সন্ধার আগে থেকেই বিমানবন্দরের বাইরে সারিবদ্ধ হয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন- প্রিয় নেতাকে একবার দেখার আগ্রহে। বিমান বন্দরে প্রথমে তাঁকে সম্বর্ধনা সারিতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে তিনি মন্ত্রীপরিষদের সদস্যবর্গ, গণ-পরিষদের সদস্য ও কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের সাথে করমর্দন করেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের বহু নেতা ও কর্মী, ছাত্র ও শ্রমিক বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুকে বিদায় জানান এবং তাঁকে বিপুলভাবে মাল্যভূষিত করেন।১৩১

রেফারেন্স: ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ