You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.02.29 | বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সফরের তাৎপর্য ও লক্ষ্য হলো বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে সহযোগিতা | দৈনিক আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সফরের তাৎপর্য ও লক্ষ্য হলো বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে সহযোগিতা

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বাংলাদেশের জনগনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছার বাণী নিয়ে মঙ্গলবার মস্কো রওয়ানা হয়ে গেছেন। তবে এ সফরে শুভেচ্ছা বিনিময় ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ছাড়াও জাতির অর্থনৈতিক বিষয়াদির বিপুল সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্পর্কেও আলোচনা হবে একথা নিশ্চয় করেই বলা চলে।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিনিধিদলের সদস্য তালিকাও প্রকারান্তরে সুস্পষ্ট করে তুলেছে যে, এ সফরে আমাদের নির্ভরশীল মিত্ররাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতাদের সাথে জাতির অত্যাবশ্যক পুনর্গঠন, রিলিফ, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রণয়ন প্রভৃতি বিষয় আলোচিত হবে। পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান ড। নুরুল ইসলাম ও অর্থসচিব জনাব মতিউল ইসলামের প্রতিনিধিদলে অন্তর্ভুক্তি বস্তুতঃ অনুরুপ সিদ্ধান্তেই পরিপূরক। তদুপরি এ সফরে বাংলাদেশ ওয়াপদার কোনো বিশেষজ্ঞ না থাকলেও বন্যা নিয়ন্ত্রনের ব্যাপারে সোভিয়েত সহযোগিতার প্রশ্নটি বিশেষ গুরুত্বের সাথে আলোচনায় স্থান পাবে বলেও জানা গেছে।
প্রকাশ সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদেশ ও ভারতের বন্যা নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে একটি যৌথ পরিকল্পনায় যৌথভাবে সাহায্য দানের প্রস্তাব করেছে। সম্ভবত বঙ্গবন্ধুর এ সফরে উপরোক্ত সোভিয়েত প্রস্তাব সম্পর্কে অন্তৎ নীতিগতভাবে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখযোগ্য যে, বাংলাদেশের অধিকাংশ নদীর উৎস বন্যার পরবর্তী ফলশ্রুতি হিসেবে প্রতিবৎসর বাংলাদেশ পানিতে ডূবে যায়। অর্থ্যাৎ উভয় দেশের বন্যা একই ধারায় অবিচ্ছেদ্য রূপ মাত্র। বলা বাহুল্য, এতদিন কাশ্মীর সমস্যার ছুতায় এ ব্যাপারে ভারতীয় সহযোগিতাকে পাকিস্তানি শোষকগোষ্ঠী ক্রমাগত অস্বীকার করে আসছে।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা জানিয়েছেন যে, এ সফরকালে বঙ্গবন্ধু রুশ নেতাদের নিকট ইয়াহিয়ার জল্লাদবাহিনী যে নির্মম ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তার একটি চিত্র তুলে ধরবেন বলে আভাস পাওয়া গেছে। তিনি বাংলাদেশের অর্থনীতির ক্ষতির খতিয়ানও রুশ নেতাদের নিকট পেশ করবেন। জানা গেছে, বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন দেশের পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে আশু চাহিদা এবং সম্ভাব্য রুশ সহযোগিতার ব্যাপ্তি সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ ‘নীল নক্সা’ সাথে নিয়ে গেছেন।
এছাড়া আশু সাহায্যের চাহিদা সম্পর্কেও প্রধানমন্ত্রী আলোচনা করবেন। এছাড়া দু’দেশের মধ্যকার যোগাযোগ, বাণিজ্য, কারিগরি, অর্থনৈতিক ও সাস্কৃতিক সহযোগিতা, নির্দিষ্ট পরিকল্পনার সাহায্যে প্রভৃতিও আলোচনায় স্থান পাবে বলে মনে হয়। উল্লেখ্য রাশিয়া ইতোমধ্যেই রুশ সহযোগিতায় নির্মীয়মান পরিকল্পনাগুলোর কাজ চালিয়ে যাবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।১৩২

রেফারেন্স: ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ