এশিয়া নিজেই তার ভাগ্য নির্ধারণ করবে- শেখ মুজিবুর রহমান
খুলনা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজ এখানে প্রেসিডে২. উদ্দেশ্যে করে বলেন যে, এশিয়ার জাতিগুলাে নিজেরাই তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে, es এক বিরাট জনসভায় বক্তৃতা করছিলেন প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্ট নিক্সনের চীন সফরের প্রসঙ্গ ” করে বলেন যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট চীনের চেয়ারম্যান মাও সেতুং এবং প্রধানমন্ত্রী চো এন লাইয়ের সাথে আলােচনার জন্যেই সেখানে গেছেন। শেখ মুজিব বলেন যে, এ ধরনের আলােচনায় কোন আপত্তি নেই। তবে তিনি চীনে বসে এশিয়ার সমস্যার সমাধান না করার জন্যে মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রতি অনুরােধ জানান। শেখ মুজিব বলেন যে, এশিয়ার সমস্যা সমাধানের অধিকার কেউ প্রেসিডেন্ট নিক্সনকে দেয় নি। এশিয়ার জাতিগুলাে নিজেরাই তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, এ পর্যন্ত ৪৩টি দেশ স্বীকৃতি দিয়েছে এবং বাংলাদেশ বর্তমানে একটি বাস্তব সত্যে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন যে, আর কেহই বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে পারবে না এবং তা চিরকাল টিকে থাকবে।
জাতীয় পুনর্গঠন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় পুনর্গঠন প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণের জন্যে জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, নয় মাস ধরে পাকিস্তানবাহিনী দেশে যে ধ্বংসলীলা চালিয়েছিল তা থেকে দেশকে পুনরায় গড়ে তােলার জন্যে আমাদের সকলেরই কঠোর পরিশ্রম করার। সময় উপস্থিত হয়েছে। তিনি খুলনা জেলার পাইকগাছার উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণ কাজে বিজলি ও সেচমন্ত্রী খন্দকার মােশতাক আহমদ এবং কৃষিমন্ত্রী শেখ আব্দুল আজিজের সহিত অংশ গ্রহণ করেন। লােনা পানির প্লাবণ থেকে কৃষি জমি রক্ষার উদ্দেশ্যে উপকূলীয় বাঁধ প্রকল্পে সেচ্ছামূলক কাজে ব্রতা হওয়ার জন্যে তিনি সাধারণের প্রতি আহ্বান জানান। পানি ও বিজলি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জনাব বি, এম আব্বাস তার সাথে ছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুকে উপকুলীয় বাঁধ প্রকল্পের বিস্তারিত বিবরণ দান করেন। জনাব আব্বাস তাকে জানান যে, এ পর্যন্ত ৯২৭ মাইল দীর্ঘ উপকূলীয় বাধ নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পাইকগাছা হতে টুঙ্গিপাড়া অভিমুখে যাওয়ার সময় ফরিদপুর জেলা দক্ষিণ বিল এলাকা পরিদর্শন করেন। জনাব আব্বাস প্রধানমন্ত্রীকে জানান যে, ২ কোটি টাকা ব্যমে শাতলা বগিদা প্রকল্পের কাজে আগামি কাজের মওশুমে হাত দেওয়া হতে পারে। এই প্রকল্পের প্রায় একশ বর্গ মাইল এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানি নিকাশের সুবিধা হবে।
রেফারেন্স: ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ