You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.02.23 | ন্যাপের উদ্যোগে একুশের আলােচনা সভা | দৈনিক আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

ন্যাপের উদ্যোগে একুশের আলােচনা সভা

“ভারতের সাম্প্রদায়ীকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদী চক্র নিয়ত বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিপ্লবকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।” কোলকাতা বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য প্রফেসর রায় একথা বলেন। বুধবার ঢাকা শহর ন্যাপের উদ্যোগে আয়ােজিত এক আলােচনা সভায় অধ্যাপক রায় বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। কাজী মােহাম্মদ ইদ্রিসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলােচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক মনােজ বসু, সাপ্তাহিক কম্পাশের সম্পাদক পান্নালাল দাস গুপ্ত, বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক সত্যেন সেন, ড. শাহ ফজলুর রহমান এবং ন্যাপ সম্পাদক সৈয়দ আলতাফ হােসেন। অধ্যাপক শান্তিময় রায় বলেন, ভাষা আন্দোলনের সূর্য সৈনিক বাংলাদেশের জনগণের নিকট আমরা কৃতজ্ঞ। তারা আমাদের চোখ খুলে দিয়েছেন। বাঙালিদের এ মহান সংগ্রাম ভারতীয়গণের মনকে প্রশস্ত করেছে। সাম্প্রদায়িকতার প্রবণতা থেকে ভারতীয়গণ মুক্তি পেয়েছে। আজ সাম্প্রদায়িকতাকে। ভারতীয় জনগণ হত্যা করেছে। এ জয় পরােক্ষভাবে বাংলাদেশের জনগণেরই জয়। তিনি আরও বলেন যে, বাংলাদেশ আন্দোলন শুরু করে ভারতকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযােগ দিয়েছে। আর সে জন্যেই ভারত সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তকে উপেক্ষা করে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করতে সক্ষম হয়েছে। প্রখ্যাত সাহিত্যিক মনােজ বসু বলেন- প্রতি বৎসর বাঙালি জীবনে একুশে আসে। এ একুশ শুধু বাঙালিদেরকেই অনুপ্রেরণা দেয় না-তা ভারতবাসীকেও প্রেরণা দেয়।
বাংলাদেশের মানুষ দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে যে অভূতপূর্ব সংগ্রামের দৃষ্টান্ত স্থা ভারতবাসীকে অনুপ্রেরণা দিবে। বাংলাদেশের জনগণ থেকে আমরা কি লাল দাশ গুপ্ত বলেন যে, বাংলাদেশের জনগণ আমাদের জ্ঞানচক্ষ আদর্শ সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা তথা রাজনৈতিক ও সামাজিক আদর্শ, সম্পর্ককে আরও অটুট করে দিবে। বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক উদ্বুদ্ধ হয়ে আবার সােনার বাংলা গড়ার জন্যে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, দ্বিতীয় পর্যায়ে এক সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়ােজন করা হয়। এতে ছায়ানটের স.. প্রখ্যাত শিল্পী জনাব জাহিদুর রহিম এ অনুষ্ঠানের পরিচালনা করেন।

রেফারেন্স: ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ