কোনো গোষ্ঠীর মাঝে স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ রাখা চলবে না
কোনো গোষ্ঠী কিংবা গোত্রের মাঝে স্বাধীনতাকে সীমাবদ্ধ রাখা চলবে না। বাংলার খেটে খাওয়া মানুষকে বহু রক্তের দামে কেনা ও স্বাধীনতাকে ভোগ করতে দিতে হবে।” শিক্ষা ও সংস্কৃতিক মন্ত্রী অধ্যাপক ইউসুফ আলী গতকাল বুধবার বাংলা একাডেমিতে একথা বলেন। মন্ত্রী বাংলা একাডেমিতে ‘আমাদের আলেখ্য’ শীর্ষক একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভাষণ দিচ্ছিলেন। ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের শহীদ স্মরণে বাংলা একাডেমির সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচী আজ ছিল দ্বিতীয় দিন। তিনিবলেন, অনাগতদিনগুলােতে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে, বাঙালিকে ভাষা আন্দোলনে শহীদানের আদর্শ প্রেরণা যােগাবে। সে সত্য আর আদর্শের জন্য তারা প্রাণ দিয়েছিলেন তা আমাদের বাস্তবায়িত করতে হবে। বাঙালি জাতির জীবনে গভীর ও ব্যাপকভাবে তার প্রতিলন ঘটাতে হবে। তা হলেই শহীদদের আদর্শ বাস্তবায়িত হবে। শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক আলী বলেন, ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনই বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ। এ ভাষা আন্দোলন ছিল সা্ম্রাজ্যবাদী শাসন ও শােষণের নাগপাশ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে বাঙালির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। পূর্বাহ্নে বাংলা একাডেমির পরিচালক জনাব কবির চৌধুরী শিক্ষামন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে বক্তৃতা করেন। তিনি বলেন, আমাদের নিজস্ব ভাষা সাহিত্য আর সংস্কৃতি সমাজবাদী শক্তির কবল থেকে আমাদের জন্মভূমিকে মুক্ত করার প্রেরণা জুগিয়েছে। এক নতুন অর্থ ও তাৎপর্য নিয়ে এসেছে। নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে একুশকে দেখতে হবে। এরপর শিক্ষামন্ত্রী ফিতা কেটে আলােকচিত্র প্রদর্শনী উদবোধন করেন। এ প্রদর্শনীতে মুক্তিযুদ্ধের উপর অসংখ্য ছবি স্থান পেয়েছে। এগুলোর মধ্যে লাঞ্ছিত মানবতা, মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ , আম্রকুঞ্জে প্রথম বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠা, অতন্দ্র প্রহরী, বিক্ষুব্ধ বাংলাদেশ’ এ পর্যায়ে ছবিগুলো অন্যান্য। প্রদর্শণির দুষ্প্রাপ্য ছবিগুলো কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় সংহতির অধ্যাপক শান্তিরঞ্জন রায় দিয়েছেন, প্রদর্শনীতে কুখ্যাত বদর বাহিনীর শহীদ লেখক, অধ্যাপক ও সাহিত্যিকগণের কিছু পুস্তকও ছিল।
রেফারেন্স: ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ