ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি
ঢাকার উপর প্রচন্ড আক্রমণে পাক-বাহিনীর ত্রাহি চীৎকার বাংলার বীরসেনানী মুক্তিবাহিনী ও মানবতার মহান আদর্শে বলীয়ান মিত্রবাহিনীর সম্মিলিত দল বিভিন্ন রণাঙ্গনে বিপুল সফলতা লাভ করে দুর্বার গতিতে বিভিন্ন দিক থেকে বাংলাদেশের প্রাণকেন্দ্র তথা হানাদার পাকবাহিনীর শেষ শক্ত ঘাঁটি ঢাকা নগরী ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের উপকণ্ঠে উপস্থিত হয়ে তাদের। ঘাটি সুদৃঢ় করে শক্রর উপর প্রবল আক্রমণ শুরু করেছে। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী প্রথম টাঙ্গাইলের পথে জয়দেবপুর হয়ে এক প্রবল সংঘর্ষের পর টঙ্গী শিল্পাঞ্চল মুক্ত করে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের মাত্র দেড় মাইল দূরত্ব থেকে শত্রু ছাউনির উপর প্রচন্ড গােলাবর্ষণ শুরু করে। সম্মিলিত বাহিনীর আর একটি দল। দাউদকান্দি ও চাঁদপুর থেকে মেঘনা নদী পেরিয়ে ঢাকার দিকে এগিয়ে আসছে। ঢাকার ৭ মাইলের মধ্যে ছত্রীসেনা নামিয়ে অত্যন্ত সফলতার সহিত মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর আর একটি সংঘবদ্ধ ঘাঁটি স্থাপন করা হয়েছে। সেখান থেকেও ঢাকার উপর প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। মধুমতি নদী পেরিয়ে পশ্চিম দিক থেকে অপর একটি দল দ্রুতগতিতে ঢাকার দিকে এগিয়ে আসছে। অপরদিকে। সেনাবাহিনীর সমর্থন দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতীয় বিমানবাহিনী শক্রর সামরিক ঘাঁটির উপর বােমাবর্ষণ করে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে। ফলে অবশিষ্ট হানাদার বাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রাবাসে প্রবেশ করেছে। কিন্তু সেখানেও নিস্তার নেই। ফলে পাকবাহিনীর ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা আর কি ঢাকা নগরীর পতন অত্যাসন্ন!
বাংলাদেশ (১) ১ : ৮ ০
১৭ ডিসেম্বর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯