ভুট্টো যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রতিরক্ষা চুক্তির ইচ্ছে জানিয়েছে
নিউইয়র্ক। যুক্তরাষ্ট্র ১৯৬৭ সালে পাকিস্তানের সাথে যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির অবসান ঘটিয়ে ছিল পাকিস্তান এক্ষণে আবার পুনরুজ্জীবনে আগ্রহী বলে ভুট্টো নিক্সন সরকারকে জানিয়ে দিয়েছেন। পাকিস্থানের প্রেসিডেন্ট ভুট্টো যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সব সংগত ব্যাপারেই আলোচনা করতে চেয়েছিলেন, যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় এটা নিক্সন সরকারের জন্য বিব্রতকর না হয়। ভুট্টো এটার সত্যতাও স্বীকার করেছেন যে, চীন যাবার পূর্বে এবং আসার পরও পিকিং সরকারের নিকট একই ধরনের প্রতিরক্ষা চুক্তিতে মোটেই উৎসাহ দেন নাই। তারা সাধারণ স্বার্থকে গুরুত্ব দেওয়ার পক্ষপাতি বলে ভুট্টোকে জানিয়ে দেন। ভুট্টো এ ব্যাপারে তার সর্ব শেষ চিন্তা ভাবনা রাওয়ালপিন্ডিতে নিউইয়র্ক টাইমস এর প্রতিনিধির সাথে সাক্ষাৎকারে প্রকাশ করেন। এর সাক্ষাৎকারে বিবরণ উক্ত পত্রিকায় প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত হয়। পিকিং-এ তার আলোচনা সম্পর্কে প্রথমবারের ন্যায় আলোকপাত করে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট তার সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী সাংবাদিককে বলেন যে, পিকিং প্রতিরক্ষা চুক্তির প্রস্তাবের উত্তরে বলে, দেখো আরেকটি কমিউনিস্ট দেশ সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে আমাদের প্রতিরক্ষা চুক্তি রয়েছে। পরিণতিতে তা আজ কি অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। কাজেই পারস্পরিক স্বার্থই ভালো এবং তাতেই দৃঢ় মৈত্রী গড়ে উঠবে। এই সাক্ষাৎকারের ওপর মন্তব্য প্রসঙ্গে নিউইয়র্ক টাইমস প্রতিনিধি মন্তব্য করেন যে, চীন ও পাকিস্তানের সাধারণ স্বার্থের দিক হতে অবশ্যই মিল রয়েছে, আর তা হচ্ছে ভারতের প্রতি শত্রুতা এবং রাশিয়ে যাতে এশিয়ায় প্রভাব বিস্তারের ব্যাপারে একচেটিয়াভাবে সফল না হয় তার জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের সাথে সাথে চীন ও পাকিস্তান উদ্বেগ বোধ করছে।
রেফারেন্স: ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ