আখাউড়া ও চাঁদপুরে দখলদারবাহিনী অন্তত ১০ হাজার মানুষ মেরে ফেলেছে
কুমিল্লা। আখাউড়া ও চাঁদপুর নদীবন্দরে পাকিস্তান দখলদারবাহিনী এবং তাদের তাবেদার আলবদরবাহিনী কর্তৃক বহু বুদ্ধিজীবীসহ অন্তত পক্ষে দশ হাজার নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকান্ড ছাড়াও বর্বর পাকিস্তান দখলদার সশস্ত্রবাহিনী কুমিল্লা জেলা দুটি শহরে বহুসংখ্যক ঘরবারি, দোকানপাট, রেলওয়ে, অফিস ভবন ও কোয়ার্টার ধ্বংস করে দিয়েছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জনাব ফজলুল বারীর বিবরণে প্রকাশ, আলবদরবাহিনী চাঁদপুরের বিভিন্ন বন্দিশালায় পাঁচ সহস্রাধীক মানুষ হত্যা করেছে। আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী সেই ত্রাসের রাজত্বকালে আখাউড়াতে কার্যরত সহকারী এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার জনাব শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন যে, গত ১৮ এপ্রিল যখন আখাউড়ায় বর্বর দখলদারবাহিনী হামলা করে, তখন সেই পশুর দল প্রায় পাঁচশ মানুষকে একসাথে গুলি করে হত্যা করে। জনাব আহমদও এদের কবলে পড়েছিলেন। ওরা বেওনেট উঁচিয়ে তার সর্বস্ব লুট করে নেয়। ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান এবং সীমান্ত পার হয়ে ভারতে চলে যান। দখলদারবাহিনী দুর্গাপুর, আমদাবাদ, কড়াইতলী, টানপাড়া, খরমপুর, রাধানগর এবং রাজপুর গ্রামগুলোর ওপর ভীষণভাবে হামলা করে। আখাউড়া আওয়ামী লীগ সেক্রেটারি নাজির হোসেন জানান যে, এ গ্রামগুলোর প্রায় পাঁচশ নিরীহ মানুষকে পাকিস্তান দখলদারবাহিনী হত্যা করেছে এবং ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। এর ফলে সম্ভবতঃ পনের হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। এই পাশবিক ধ্বংসযজ্ঞ এবং হত্যাকান্ডের ফলে আখাউড়ার এবং চারপাশের গ্রামগুলো জনমানবহীন হয়ে পড়ে। ৬০
রেফারেন্স: ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ