সিলেটের তৈল শােধনাগার অক্ষত
গত ১৪ই ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ভারতীয় বাহিনীর সহায়তায় বাঙলাদেশের একমাত্র তৈল শোধনাগারটি অক্ষত অবস্থায় দখল করে নিয়েছেন। সিলেট জেলা শহরের চৌদ্দ মাইল দূরে অবস্থিত হরিপুরের এই তৈল শােধনাগারটির নাম হ’ল পাকিস্তান পেট্রোলিয়াম লিমিটেড। শােধনাগারটি দখল করার সময় সেখানে ১২০০০ গ্যালন পেট্রল মজুত ছিল। তাছাড়া প্রচুর পরিমাণ গ্যাসও পাওয়া গেছে। ফেঞ্চুগঞ্জের বৃহত্তম সার কারখানাতে এই হরিপুর থেকেই গ্যাস সরবরাহ করা হতাে। প্রতিদিন প্রায় ৩০০০ গ্যালন শােধিত পেট্রোলিয়াম এই শােধনাগারে উৎপন্ন হয়। তাছাড়া প্রায় চল্লিশ হাজার গ্যালন মজুত রাখার ব্যবস্থাও এই শােধনাগারে রয়েছে। এই রনাঙ্গনের অধিনায়ক জানান যে এই শােধনাগারটি দখল করার আগে তিন কোম্পানী পাক। সৈন্যকে এটি পাহারা দেবার কাজে নিয়ােগ করা হয়েছিল। কিন্তু সম্মিললিত বাহিনীর প্রচন্ড আক্রমণের মুখে টিকতে না পেরে শত্রুসৈন্যরা নিজেদের প্রচুর ক্ষতি স্বীকার করে হরিপুর ছেড়ে পালিয়ে যায় । পাক সৈন্যের আঠারােটি শব দেহ আমাদের মুক্তিবাহিনী এক জায়গায় দেখতে পায়। পালিয়ে যাবার সময় পাক সৈন্যরা দুটো ভারী চীনা মেশিনগান কয়েকটি রাইফেল ১৫০টি আর্টিলারী শেল, কতকগুলাে সামরিক জীপ একটি টয়ােটা গাড়ী এবং প্রচুর পরিমাণ গােলাবারুদ ফেলে চলে যায়। তিনজন আহত পাক সেনাকে বন্দী করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে তারা তিনজনেই মারা যায়। শক্ররা মর্টারের আক্রমণে শােধনাগারটি নষ্ট করতে চেয়েছিল কিন্তু পারেনি।
অভিযান ১:১৪
১৭ ডিসেম্বর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯