পতনের খতিয়ান যশোের ক্যান্টনমেন্ট, আখাউড়া, লাকসাম, সাতক্ষীরা
কুমিল্লা, লালমণিরহাট, এবং প্রায় সমগ্র বাংলাদেশ! গত সংখ্যার বিপ্লবী বাংলাদেশ’ (৫ই ডিসেম্বর) দেখুন। তাতে এই সব অঞ্চলে লড়াই চলার কথা দেওয়া আছে। শুধু গত সংখ্যায় কেন, বিগত পাঁচ মাস ধরে এই সব জায়গায় মুক্তিবাহিনী বারম্বার আঘাত হেনেছেন। আজ সগর্বে এসব অঞ্চলের মুক্তি ঘােষণা করার দিন এসেছে। সম্ভবতঃ এই সংখ্যা আপনার হাতে পৌছতে পৌছতেই সমগ্র বাংলাদেশ মুক্ত হয়ে যাবে। রাজধানী ঢাকার পাক সিংহাসন আজ টলােমলাে। ১০ই ও ১১ই ডিসেম্বর সেখানে কোন আক্রমণ চালানাে হবেনাতে বিদেশী নাগরিকেরা নির্বিঘ্নে আপনাপন দেশে ফিরতে পারেন। তারপরই ঢাকা আক্রান্ত হবে। এর একমাত্র ফল হবে বাংলাদেশের মুক্তি। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর আক্রমণ রােধ করার ক্ষমতা আজ আর খান সেনাদের নেই। চট্টগ্রাম, চালনা, ও মঙ্গলা—এই তিনটি বন্দর ভারতীয় নৌবাহিনী আক্রমণ চালিয়েছে। মঙ্গলাতে মুক্তিবাহিনী তার দফতর খুলে বসেছে। অন্য বন্দরগুলােতেও মুক্তিবাহিনী প্রবল আক্রমণ চালাচ্ছে। পাক হানাদারেরা এখন কলে পড়া ইদুরের মতাে শেষের প্রহর গুণছে। না পারছে তারা বিমানে করে পালাতে, পারছে জাহাজে করে সরে পড়তে। বাঙালী অনেকদিন ধরেই স্বাধীন বাংলার স্বপ্ন দেখছে। আজ এসেছে স্বাধীন বাংলায় সদর্পে পা। ফেলার দিন। সর্বশেষ সংবাদ রাজশাহী পতনের মুখে ১০ই ডিসেম্বর বিশ্বস্তসূত্রে সংবাদ পাওয়া গেল যে আজ রাতেই রাজশাহীর পতন হবে। কাল থেকে সেখানে উড়বে বাংলাদেশের পতাকা।
বিপ্লবী বাংলাদেশ ১:১৭
১২ ডিসেম্বর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯