You dont have javascript enabled! Please enable it!

বিভিন্ন ঘাটি হইতে পাকবাহিনীর পশ্চাদপসরণ

(নিজস্ব সংবাদদাতা) আমাদের দুর্ধর্ষ মুক্তিবাহিনী ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে শত্রুসেনার উপর চূড়ান্ত আঘাত হেনে চলেছে। মুক্তিবাহিনী আর মিত্রবাহিনীর সম্মিলিত চরম আঘাতে নাজেহাল হয়ে পাকবাহিনী একের পর এক তাদের ঘাঁটিগুলি ছেড়ে দিয়ে পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে। শত্রুসেনারা এখন কয়েকটি ক্যান্টনমেন্টে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী তাদেরকে সর্বদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে। তাদের পালাবার আর কোন পথ নেই। যশাের রণাঙ্গনে মুক্তিবাহিনী মিত্রবাহিনীর সহযােগিতায় দুর্ভেদ্য যশাের ক্যান্ট দখল করে নিয়েছে। যশাের বিমান বন্দর সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত করে আর এক তুমুল সংঘর্ষের পর ঝিনাইদহ শহরটি মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী দখল করে নেয়। যশাের এখন সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত। রংপুরের লালমনিরহাট বিমান বন্দর আমাদের মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর দখলে এসেছে। দিনাজপুর শহর দখল করার জন্য মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী শত্রু ছাউনির উপর প্রবল আক্রমণ চালিয়েছে। সেখানে এখন তুমুল যুদ্ধ চলছে। কুমিল্লা রণাঙ্গনে আমাদের মুক্তিযােদ্ধারা মিত্রবাহিনীর সহযােগিতায় কুমিল্লা বিমান বন্দর ও কুমিল্লা শহর দখল করে নিয়েছে। ময়নামতি ক্যান্ট এখন সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী পাকসেনাদের সমস্ত যােগাযোেগ বিচ্ছিন্ন করে তাদেরকে চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে। মােমেনশাহী, কিশােরগঞ্জ, শেরপুর ও জামালপুর শক্রকবল থেকে মুক্ত করে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর বীর সেনারা মােমনশাহী শহর ও ক্যান্টনমেন্টের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। লাকসাম ও আখাউড়া আমাদের বীরসেনা ও মিত্রবাহিনীর পুনর্দখলে। আখাউড়া ও কুমিল্লার সংঘর্ষে ৭ শতাধিক খানসেনা নিহত হয়েছে। ছাতক ও শ্রীহট্ট শহর সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত হয়েছে। ঢাকা জেলার মানিকগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ মহকুমা শক্রকবল থেকে মুক্ত। চারিদিক থেকে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী ঢাকার দিকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে আসছে। নারায়ণগঞ্জ থেকে মাত্র ১২ মাইল দূরে মেঘনার তীরে দাউদকান্দি পর্যন্ত আমাদের বীরসেনারা ও মিত্রবাহিনী এসে পৌছেছে। তাদের সুবিশাল দৃষ্টি ঢাকার দিকে।

বাংলাদেশ (৪) ১: ৭।

১০ ডিসেম্বর ১৯৭১

সূত্র:  গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড  ০৯

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!