You dont have javascript enabled! Please enable it!

হানাদারদের সমর্থন করায় চীন বাংলাদেশে তার জনপ্রিয়তা হারিয়েছে

বুদাপেষ্ট। পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশসমূহ সফররত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আবদুস সমাদ বলেন, যে দেশ নিজেকে সমাজন্ত্রিক রাষ্ট্র বলে দাবি করে সে দেশ আবার কীভাবে মুক্তিযুদ্ধরত একটি জাতির শত্রুর পক্ষাবলম্বন করতে পারে তা বোধগম্য নয়। গত সপ্তাহে হাঙ্গেরী সফরকালে একটি স্থানীয় সংবাদপত্রের জনৈক প্রতিনিধির নিকট সাক্ষাৎ দানকালে জনাব সামাদ চীন প্রসঙ্গে উপরোক্ত মন্তব্য করেন। হাঙ্গেরীও সংবাদপত্রে উক্ত সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বলেন যে, চীন হানাদারদের সমর্থন করায় বাংলাদেশে জনপ্রিয়তা হারিয়েছে। আবার বাংলাদেশে জাতিসংঘভুক্তির বিরোধীতা করে চীন তার নীতির প্রতি বীতশ্রদ্ধা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। জনাব সামাদ আরও বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে আমরা চীনের নিন্দা করতে চাই না এবং আমরা দ্বিপাক্ষীক সম্পর্ক স্থাপনে প্রস্তুত রয়েছি।’ সমতার ভিত্তিতে বাংলাদেশ পাকিস্তানের সাথেও আলাপ-আলোচনা করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জনাব সামাদ মন্তব্য করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পাকিস্ত নের স্বার্থে যথা শীঘ্র সম্ভব বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়া উচিত।
বুলগেরিয়ার সাথে সকল বিষয়ে পূর্ণ মতৈক্য : সোফিয়া থেকে অপর এক খবরে বলা হয় যে, জনাব সামাদ গত শুক্রবার সোফিয়া বিমানবন্দরে বলেছেন যে, চলতি সফরকালে তিনি অন্যান্য যে সমাজতান্ত্রিক দেশ সফর করেছেন তখনকার নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনায় তিনি অত্যন্ত সন্তুষ্ট হয়েছেন। জনাব সামাদ জনৈক সাংবাদিকদের সাথে আলোচনাকালে বুলগেরিয়ার প্রতি বাংলাদেশের জনগণের আন্তরিকতা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বুলগেরিয়ার জনগণ বিরাট আন্তরিকতা ও সততার সাথে আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করেছে, সেজন্য বাংলাদেশের জনগণ কৃতজ্ঞ। আমাদের স্বাধীনতা লাভের পরই যেসব দেশ বাংলাদেশকে প্রথম কূটনৈতিক স্বীকৃতি দান করে তার মধ্যে বুলগেরিয়া অন্যতম। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরের ফলে বাংলাদেশ ও বুলগেরিয়ার মধ্যেকার বর্তমান বন্ধুত্বের সম্পর্ক আরও প্রসারিত হওয়ার পক্ষে সহায়ক হবে বলে তিনি দৃঢ় আশা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব সামাদ গত শুক্রবার বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী সার্কো টোডোরভের সাথে আলাপ-আলোচনা করেন। আলোচনা অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে বুলগেরিয়ার বার্তা সংস্থা বি টি এ সূত্রে বলা হয়েছে। এই আলোচনাকালে বুলগেরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার স্নাডেনভও উপস্থিত ছিলেন। এর আগে দু’দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠকে আলোচিত সকল বিষয়ে উভয়েই পূর্ণ মতৈক্য প্রকাশ করেছেন।২৯

রেফারেন্স: ১১ নভেম্বর ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!