You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.11.01 | সংবিধানে মৌলিক অধিকারের রক্ষাকবচ রয়েছে | দৈনিক আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

সংবিধানে মৌলিক অধিকারের রক্ষাকবচ রয়েছে

আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন গণপরিষদে ভাষণ দানকালে বলেন যে, আওয়ামী লীগ সরকার পরিষদে যে সংবিধান পেশ করেছেন তা বিশ্বের গুটি কয়েক দেশের সংবিধানের মধ্যে অন্যতম। যেহেতু এ সংবিধানে কর্মকর্তাদের ইচ্ছে মতো দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার ক্ষমতা দিয়ে কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। আইনমন্ত্রী বিরোধী দলীয় সদস্য মি. সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও স্বতন্ত্র সদস্য মি. মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার আশঙ্কা নিরসন করছিলেন। তারা এই মর্মে আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, আইনে আরোপিত বিধিনিষেধের গৃহীত ব্যবস্থাকে কর্মকর্তারা বিরোধী দলকে দমনের ব্যাপারে ব্যবহার করতে পারে। উভয় সদস্য পৃথক বক্তৃতায় মি. লারমার সংশোধনী প্রস্তাবে সংবিধানের ৩৮ নং অনুচ্ছেদ থেকে আইন শৃঙ্খলা ও নৈতিকতার স্বার্থে আইনে আরোপিত বিধিনিষেধের প্রেক্ষিতে শব্দগুলো বাদ দেয়ার কথা বলেন। ড. কামাল বলেন যে, সংবিধানে জনগণকে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা শাসিত হওয়ার দ্বার উন্মুক্ত রয়েছে। পূর্বাহ্নে মি. লারমা যুক্তি প্রদর্শন করে বলেন যে, বিরোধী দলের কণ্ঠরোধের জন্যে কর্মকর্তারা এ ধরনের বিধিনিষেধ ব্যবহার করতে পারবে। তিনি আইয়ুব আমলের কথা উল্লেখ করে বলেন যে, সে সময়ে জনগণের মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ন করার জন্যে কর্মকর্তারা এ জাতীয় ব্যবস্থার অপব্যবহার করছে। মি. সেন গুপ্ত মি. লারমাকে সমর্থন করেন এবং উল্লেখিত শব্দসমূহ বাদ না দেয়ার প্রেক্ষিতে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি উক্ত অনুচ্ছেদে ‘ইউনিয়ন ও ধর্ম ঘটের অধিকার’ শব্দগুলো অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেন এবং বলেন যে, এই শব্দগুলো শ্রমিকদের ধর্মঘট ও ইউনিয়ন করাকে কার্যকরীভাবে সুনিশ্চিত করবে। উভয় সদস্যের বক্তব্যের বিরোধীতা করে আইনমন্ত্রী বলেন, আইয়ুবের আমলের দিনগুলো ছিল ঔপনিবেশিক শাসনের। আইয়ুব ১৯৬২ সালে শাসনতন্ত্র দিয়েছিল যাতে ১৯৬৪ সালের আগে মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত কোনো অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত ছিল না। কিন্তু ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধকালে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে সেই অধিকার সমূহ ক্ষুন্ন করা হয়। ইয়াহিয়া খানও সামরিক আইনের অধীনে দেশ শাসনের মাধ্যমে এই সব অধিকার নামে মাত্র রেখেছিল। আইনমন্ত্রী বলেন, ধর্মঘটের অধিকার ইউনিয়নের অংশ হতে পারে না। যেহেতু তা আইনের বিশদ বিবরণের সাথে সংশ্লিষ্ট কিন্তু সংবিধানের বিলে ইউনিয়ন গঠনের যথেষ্ট অধিকার দেয়া রয়েছে। বিলে ইউনিয়ন শব্দটি সংঘ বলে ব্যবহৃত হয়েছে।১

রেফারেন্স: ১ নভেম্বর ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ