You dont have javascript enabled! Please enable it!

১৫৫ জন বাঙালী সৈন্যের মুক্তিবাহিনীতে যােগদান

পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর অধীন পঞ্চম বেঙ্গল রেজিমেন্টের ১৫৫ জনের একটি দল গত ৮ই ডিসেম্বর মুজিবনগরে বাংলাদেশের বীর মুক্তিবাহিনীতে যােগ দিয়েছেন। এই দলটি সম্প্রতি লাহাের থেকে পালিয়ে ভারতে চলে আসেন। বাংলাদেশে মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক কর্ণেল এম, এম, জি ওসমানী তাদের সাদর সম্ভাষণ জানান। চারজন জুনিয়র কমিশনড় অফিসার এই দলটিকে গত বুধবার সকালে মুজিবনগর নিয়ে আসা। হয়। পালিয়ে আসার সময় এই সব বাঙালী সৈন্যরা তিন ইঞ্জি মর্টার, হালকা মেশিনগান, স্টেনগান সমতে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র এবং গােলাবারুদ নিয়ে আসেন। আত্মসমর্পণের কাহিনী বর্ণনা করতে গিয়ে দলের মুখপাত্র জানালেন, গত মার্চ মাস হতেই তারা মুক্তি বাহিনীতে যােগ দেয়ার চেষ্টা করে আসছিলেন, হাবিলদার আব্দুল সােবাহান এবং নায়েক আব্দুস কালাম জানান যে, তাদেরকে লাহােরে নিয়ােগ করা হয়েছিল। গত ৩রা ডিসেম্বর তাদেরকে অমৃতসর সেক্টরে ভারতীয় চৌকির ওপর আক্রমণ চালাবার নির্দেশ দেয়া হয়। সেই অনুপাতে তারা ভারতীয়। সীমান্ত চৌকি রানিবা আক্রমণ করেন এবং ভারতীয় সৈন্য বাহিনীর সাথে প্রচণ্ড সংঘর্ষের পর শ্রী চৌকিটি দখল করেন। এই দলটির ১৭৫ জন সৈন্যের সবাই ছিলেন বাঙালী। ৩রা ডিসেম্বর রাত সাড়ে দশটায় রানিবার্তা চৌকিটি তারা দখল করেন।

আব্দুস সােবহান এবং তার সহকর্মীরা আরাে জানান যে সীমান্ত দখল করার পর পরদিন ভাের তিনটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে থাকেন। কারণ পাকিস্তান সৈন্য বাহিনীর একটি দল খাদ্য এবং অন্যান্য সরবরাহ নিয়ে আসার কথা ছিল। কিন্তু তাদের কেউই আসেনি। এই পরিপ্রেক্ষিতে তারা ভারতীয় সৈন্যের কাছে আত্মসমর্পণ করে মুক্তিবাহিনীতে যােগ দেয়ার সুবর্ণ সুযােগ বলে মনে করেন। ভাের তিনটেয় তারা ভারতীয় সৈন্যের কাছে আত্মসমর্পণ করার সিদ্ধান্ত নেন। আব্দুস সােবহান আরাে জানান যে প্রায় আড়াই হাজার বাঙালী সৈন্য এখনাে পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন রণাঙ্গনে নিয়ােজিত আছেন। ভবিষ্যতে তাদের অবস্থা যে কি হবে তা একমাত্র আল্লাহ জানেন। ভারত সরকার কর্তৃক বাংলাদেশের স্বীকৃতি দানের পরপরই উৎফুল্ল কোলকাতার এক বিশাল জনতা কলকাতাস্থিত বাংলাদেশ মিশনের সামনে ভারত বাংলাদেশ মৈত্রীধ্বনি দিচ্ছেন।

অভিযান। ১: ৩।

১০ ডিসেম্বর ১৯৭১

সূত্র:  গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড  ০৯

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!