আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাকে কমিটির বৈঠকে
এক ইউনিট বিলােপের সিদ্ধান্ত গৃহীত
(স্টাফ রিপাের্টার)
নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগের নবগঠিত কাৰ্যনিৰ্বাহক কমিটি গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় শেখ মুজিবর রহমানের বাসভবনে অনুষ্ঠিত প্রথম বৈঠকে পশ্চিম পাকিস্তানের এক ইউনিট বিলােপের পক্ষে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে। বিষয়টির উপর সংক্ষিপ্ত আলােচনার পর সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবে দাবী করা হইয়াছে যে, এক ইউনিট গঠনের পূৰ্ব্বকালীন স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদায় সাবেক প্রদেশগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করা হউক।
পূৰ্ব্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগের নবগঠিত কাৰ্যনিৰ্বাহক কমিটির বৈঠকে পূর্ব পাকিস্তানের ১৭ জন এবং পশ্চিম পাকিস্তানের ৭ জন সদস্য যােগদান করিয়াছেন। পূর্ব পাকিস্তানের ২৪ জন সদস্যের মধ্যে ২ জন অসুস্থ এবং পাঁচজন জেলে রহিয়াছেন।
গতকাল অনুষ্ঠিত বৈঠকে পাকিস্তান আওয়ামী লীগের নবগঠিত কাৰ্যনিৰ্বাহক কমিটিতে উভয় প্রদেশ হইতে আরও আটজন সদস্য কো-অপট করা হইয়াছে। এই আটজন লইয়া নবগঠিত কমিটির সদস্যসংখ্যা দাঁড়াইল ৫৬ জন। কমিটিতে উভয় প্রদেশ হইতে আরও কয়েকজন সদস্য গ্রহণ করা হইবে বলিয়া জানা গিয়াছে।
পশ্চিম পাকিস্তান হইতে কো-অপটকৃত সদস্যের মধ্যে প্রাক্তন সিন্ধু প্রদেশের প্রবীণ রাজনীতিবিদ কাজী ফয়েজ মােহাম্মদ রহিয়াছেন। জনাব ফয়েজ মােহাম্মদ দীর্ঘদিন যাবৎ সিন্ধুর হারি (কৃষক) কমিটির সভাপতি ছিলেন।
গতকাল একটি বিবৃতিতে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যােগদানের কথা ঘঘাষণা করেন। বিবৃতিতে তিনি ৬-দফা আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন এবং এক ইউনিট বিলােপের দাবী জ্ঞাপন করেন। তিনি এক ইউনিটকে ‘অস্বাভাবিক’ ও ‘অগণতান্ত্রিক’ বলিয়া অভিহিত করেন।
কাঠামাে
বৈঠকে নবগঠিত কাৰ্যনিৰ্বাহক কমিটির কাঠামাে বিষয়ে আলােচনার পর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, বর্তমান অবস্থাই বহাল থাকিবে। বৈঠকে জনাব কামরুজ্জামানকে কমিটির স্থায়ী আহ্বায়ক নির্বাচিত করা হইয়াছে।
গঠনতন্ত্র
গতকাল বৈঠকে পাকিস্তান আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র ও ঘােষণাপত্র প্রণয়নের জন্য দশ সদস্যের একটি সাব-কমিটি নিৰ্বাচিত করা হইয়াছে। এই সাবকমিটিকে ৬-দফা, এক ইউনিট-ব্যবস্থা বিলােপ এবং সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ভিত্তিতে দলীয় গঠনতন্ত্র এবং ঘােষণাপত্র প্রণয়নের নির্দেশদান করা হইয়াছে।
কমিটির প্রথম বৈঠকে গভীর রাত পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
Reference: আজাদ, ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৬৭