You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.10.29 | বাংলাদেশে ধ্বংসযজ্ঞের জন্য যারা দায়ী ভুট্টো তাদেরই একজন | দৈনিক ইত্তেফাক - সংগ্রামের নোটবুক

বাংলাদেশে ধ্বংসযজ্ঞের জন্য যারা দায়ী ভুট্টো তাদেরই একজন

নয়াদিল্লি। পাকিস্তানের ন্যাপ সভাপতি খান আব্দুল ওয়ালি খান বলেছেন, কোনোরূপ পূর্বশর্ত ছাড়াই পাকিস্তানের উচিত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়া, যাতে দুই দেশের সরকার দুই ভাই হিসাবে অথবা দুই প্রতিবেশী হিসাবে আলোচনা বৈঠকে বসে তাদের সমস্যাবলী নিয়ে আলোচনা করতে পারে। এখানকার ‘প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকার দৈনিক লন্ডনস্থ প্রতিনিধির সাথে এক সাক্ষাৎকারে ওয়ালি খান বলেন, বাস্তব ক্ষেত্রে মি. ভুট্টো বাংলাদেশের অস্তিত্ব স্বীকার করে থাকেন। তার প্রেসিডেন্ট পদ যখন টলটলায়মান হয় তখন তিনি বাংলাদেশকে স্বীকার করেন। কিন্তু যখন যুদ্ধবন্দিদের ফেরত আনার প্রশ্ন ওঠে তখন তিনি স্বীকার করেন না। পাকিস্তান কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার পূর্বেই মি, ভুট্টোর সাথে শেখ মুজিবুর রহমানের দেখা করা উচিত। এই মতের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রশ্ন করে জনাব ওয়ালি খান বলেন, কোন ক্যাপাসিটি’তে শেখ মুজিব মি. ভুট্টো সাথে দেখা করবেন। শেখ মুজিব পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা ছিলেন। অথচ মি, ভুট্টো সেই স্থান জবর দখল করেছেন। পাকিস্তান ন্যাপ সভাপতি আরও বলেন, বাংলদেশের নেতারা জানেন যে, পাকিস্তানের কতিপয় রাজনৈতিক নেতার সামরিক শাসকগোষ্ঠির সাথে আতাত রয়েছে এবং তারা বাংলাদেশের ধ্বংযজ্ঞের জন্য দায়ী। মি. ভুট্টো তাদেরই একজন। কাজেই বাংলাদেশের নেতাদের পক্ষে তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা অতীব দুরূহ ব্যাপার। অথচ নির্মম পরিহাসের বিষয় এই যে, যে ব্যক্তি পূর্ববঙ্গে’ ধ্বংযজ্ঞের জন্য দায়ী, সে ব্যক্তিই পাকিস্তানের নেতা হিসাবে নিজেকে জাহির করে বাংলাদেশ নেতৃবৃন্দকে এমন অবস্থায় রাখছেন, যে অবস্থায় তারা মি. ভুট্টোর সাথে এমন কী আলোচনা করতেও পারেন না। তিনি বলেন, তার দল বাংলাদেশ ও ভারতের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ব্যাপারে সবসময়ই সরকারের প্রতি আন্তরিক সমর্থনদানের নিশ্চয়তা দিয়েছে। তিনি মি. ভুট্টোর বহুরূপী চরিত্রের উল্লেখ প্রসঙ্গে বলেন, তার মতি বুঝা ভার, দিনে এক কথা বললেও রাত্রে সুর একেবারেই পাল্টে যায়। সীমান্ত নেতা মি. ভুট্টোকে প্রতিবিপ্লবী’ হিসাবে আখ্যায়িত করে বলেন, তিনি অতিবিপ্লবী ধ্বনি তুলে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের ক্ষতিসাধন করছেন। অথচ নিজের স্লোগানে মি. ভুট্টো নিজেই বিশ্বাসী নন। এই প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, সোচ্চার স্লোগান সত্ত্বেও প্রকৃত কৃষক ও শ্রমিকেরা জমি ও কারখানার মালিকানা পায় নাই। তার দল ও দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে অবিশ্রান্ত কুৎসা প্রচারের অভিযোগ করে ন্যাপ প্রধান মি. ভুট্টোকে “ফ্যাসিষ্ট এডলফ ভুট্টো হিসাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, জনাব ভুট্টো নিরংকুশ ক্ষমতার পেয়ালায় আকণ্ঠ মগ্ন থাকতে চান।১২১

রেফারেন্স: ২৯ অক্টোবর ১৯৭২, দৈনিক ইত্তেফাক
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ