গণপরিষদ সদস্যদের প্রতি বঙ্গবন্ধু
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খসড়া সংবিধান বিল আলোচনায় মূল্যবান সময়ের পূর্ণ সদ্বব্যবহারে পরিষদ কর্মসূচির মধ্যে আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখার জন্য সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। শুক্রবার গণপরিষদের বিকালের অধিবেশনে জনৈক সদস্যের একটি অধিকার প্রস্তাব নিয়ে পরিষদে প্রায় আধ ঘণ্টাকাল আলোচনা চললে মাননীয় ডেপুটি স্পীকার পরিষদের নেতাকে এই ব্যাপারে আলোকপাত করার জন্য অনুরোধ করেন। উক্ত সদস্য একটি অধিকারের প্রশ্ন উত্থাপন করে সকল সদস্যই আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন এবং এই মর্মে ডেপুটি স্পীকারের নিকট থেকে আশ্বাস কামনা করেন। এক পর্যায়ে উক্ত সদস্য আগ্রহী বক্তাদের নামের তালিকা ডেপুটি স্পীকারের নিকট দেশের ব্যাপারে চীফ হুইপ নিরপেক্ষতা বজায় রাখছেন কিনা, সে সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেন। এই সময় বহু সংখ্যক সদস্য বৈধতা ও অধিকারের প্রশ্ন উত্থাপন করলে পরিষদে কিছুটা হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। অতপর ডেপুটি স্পীকার বঙ্গবন্ধুকে এ সম্পর্কে কিছু বলতে অনুরোধ করেন। বঙ্গবন্ধু বলেন, যেহেতু অনেক সদস্যই গণপরিষদে নতুন প্রবেশ করেছেন তাই বৈধতার প্রশ্নের নামে অধিকারের প্রশ্ন এবং অধিকারের প্রশ্নের নামে বৈধতা প্রশ্নের কিছুটা সংমিশ্রণ হবে, তা অস্বাভাবিক কিছু না তবে এ ব্যাপারে পরিষদের রীতিনীতিই পরিষদের কর্মসূচি পরিচালনার সহায়ক হবে।
স্পীকারকে সাহায্য করতে পারেন। এ প্রসঙ্গে তিনি সংসদীয় গণতন্ত্রে চীফ হুইপের ভূমিকা ব্যাখ্যা করেন। তিনি সামান্য বিষয় নিয়ে পরিষদের কর্যসূচী ব্যাহত হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন যে, এই ব্যাপারে আলোচনায় মাসাধিককাল লাগা উচিত নয়। আলোচনায় কেউ হয়ত অংশ নিতে পারবেন, কেউ হয়ত পারবেন না, এই সামান্য বিষয় নিয়ে সময়ক্ষেপণ না করলে আরও সদস্য আলোচনায় অংশ নিতে পারতেন। তিনি বলেন, এ অবস্থার পরিপেক্ষিতে আলোচনা সমাপ্তি প্রস্তাব উত্থাপিত হতে পারে এবং এটা গৃহীত হলে বিলটি সম্পর্কে বর্তমান সাধারণ আলোচনা সমাপ্ত হলো বলে গণ্য করা হবে। তবে পরবর্তী পর্যায়েও সদস্যগণ আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে পারবে বলে তিনি জানান।১১২
রেফারেন্স: ২৭ অক্টোবর ১৯৭২, দৈনিক ইত্তেফাক
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ