শেখ মুজিবের মামলার শুনানী
গত বুধবার ঢাকার প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট জনাব এম. এ. মালিকের কোর্টে পূর্ব পাকিস্তান জননিরাপত্তা আইনে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবর রহমানের বিরুদ্ধে আনীত মামলায় সরকারপক্ষের প্রদত্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাঁহার বিরুদ্ধে অভিযােগ গঠনে যৌক্তিকতার উপর সওয়াল জবাব অনুষ্ঠিত হয়।
সওয়াল-জবাব প্রসঙ্গে সরকারপক্ষ হইতে শেখ মুজিবর রহমানের আপত্তিকর বলিয়া কথিত বক্তৃতাটির কয়েকটি অংশের উদ্ধৃতি দিয়া বলা হয় যে, উহা নিঃসন্দেহে আইনের দৃষ্টিতে অপরাধমূলক এবং উহা প্রমাণের জন্য প্রয়ােজনীয় সাক্ষ্যপ্রমাণ কোর্টে উপস্থিত করা হইয়াছে। অতএব পূর্ব পাকিস্তান জননিরাপত্তা আইনের ৭(৩) ধারামতে অভিযােগ গঠন করিয়া শেখ মুজিবরের বিচার হওয়া উচিত।
আসামীপক্ষ হইতে বলা হয় যে, শেখ মুজিবরের সম্পূর্ণ বক্তৃতা আদালতে উপস্থিত করা হয় নাই। তাই বক্তার বক্তৃতার পূর্ণ বিবরণ ব্যতিরেকে উহার বিচার করা সম্ভব নয়। তদুপরি শেখ মুজিবরের যে বক্তৃতার অংশবিশেষ কোর্টে উপস্থিত করা হইয়াছে, উহাতে আপত্তিকর কিছু নাই। ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালানাে এবং উহার জন্য জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করা একটি গণতান্ত্রিক দেশে অপরাধমূলক কার্য হইতে পারে না।
উভয় পক্ষের সওয়াল জবাব শুনিবার পর ম্যাজিষ্ট্রেট জনাব শেখ মুজিবরের বিরুদ্ধে এই মামলার অভিযােগ গঠন করিয়া বিচার করা হইবে কি হইবে না এই মর্মে সিদ্ধান্ত দানের জন্য আগামী ২৯ শে জানুয়ারি মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য্য করে।
সরকারপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর জনাব বখত ও আসমীপক্ষে আইনজীবী মেসার্স আবুল হােসেন, শাহ মােয়াজ্জেম হােসেন ও খােন্দকার মাহবুব হােসেন মামলার পরিচালনা করেন।
Reference: সংবাদ, ৭ জানুয়ারি ১৯৬৬