সিমলা চুক্তি বাস্তবায়নে ভারত সরকারের সংকল্প ঘোষণা
জাতিসংঘ। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এক নীতি নির্ধারণী ভাষণে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতা সর্দার শরণ সিং বিশ্বের মানচিত্রে সার্বভৌম রাষ্ট্ররূপে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের প্রতি সদস্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জাতিসংঘে বাংলাদেশকে সদস্যপদ দানের ব্যবস্থা করার জন্য জোর আবেদন করেন। বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য নিরাপত্তা পরিষদকে সুপারিশ করার জন্য তিনি সদস্যদের অনুরোধ জ্ঞাপন করেন। সাধারণ পরিষদের বর্তমান অধিবেশনে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করতে না পারায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। সর্দারজী বলেন যে, বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি জাতিসংঘের পদ্ধতিকে অধিকতর শক্তিশালী করবে এবং জাতিসংঘের সর্বজনীনতার নীতিকেই সমুন্নত করবে। তিনি উল্লেখ করেন যে, বিশ্বসংস্থায় বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে উপমহাদেশের দেশ সমূহের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা ত্বরান্বিত হবে। এবং বিশ্বের এই এলাকায় শান্তি ও সম্প্রীতি অর্জিত হবে। সর্দার শরণ সিং আশা প্রকাশ করেন যে, সম্ভাব্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যেই পাকিস্তান ও বাংলাদেশ নিজেদের সকল সমস্যা সমাধানে সমর্থ হবে। সর্দার শরণ সিং বলেন যে, সিমলা চুক্তি বিশ্বস্তভাবে বাস্তবায়নের জন্য ভারত সম্পূর্ণরূপে কৃতসংকল্প। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা ও সহযোগিতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সিমলা চুক্তি প্রথম বড় রকমের ফলপ্রসূ পদক্ষেপ। সাধারণ পরিষদে এক নীতি নির্ধারণী ভাষণে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন যে, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জনাব ভুট্টোও সিমলা চুক্তির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করেছেন এবং চুক্তি কার্যকরী করার জন্য তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভারতীয় উপমহাদেশ শীঘ্রই সমঝোতা ও সহযোগিতার পথে অগ্রসর হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, চীন ও ভারতের সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত ও প্রয়োজনীয় উন্নতি সাধিত হয় নাই। উগান্ডা হতে এশীয়দের বহিস্কারে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।১৩
রেফারেন্স: ৪ অক্টোবর ১৯৭২, দৈনিক ইত্তেফাক
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ