You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.10.03 | জাতিসংঘে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষে ইন্দোনেশিয়া ও বার্বাডোসের জোর আবেদন | দৈনিক ইত্তেফাক - সংগ্রামের নোটবুক

জাতিসংঘে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষে ইন্দোনেশিয়া ও বার্বাডোসের জোর আবেদন

জাতিসংঘ। বাংলাদেশকে বিশ্বসংস্থায় সদস্যপদ দানের জন্য জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ইন্দোনেশিয়া ও বার্বাডোস জোর আবেদন জানায়। এই দুইটি দেশের প্রতিনিধিরা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পাদিত সিমলা চুক্তিকেও অভিনন্দিত করেন। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনা ফলপ্রসূ হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন। ইন্দোনেশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি জনাব আনোয়ার সানি সাধারণ পরিষদে বলেন যে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ২৬তম অধিবেশন দক্ষিণ এশীয় উপমহাদেশে যুদ্ধের অগ্নিশিখা প্রত্যক্ষ করেছে। কিন্তু আজ পরিষদের ২৭তম অধিবেশনে এসে সেই বিয়োগান্ত দৃশ্য ইতিহাসের অঙ্গীভূত দেখতে পারছি। জনাব সানি বলেন যে, পাকিস্তান ও ভারত উভয়দেশই ইন্দোনেশিয়ার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। পাকিস্তান ও ভারতের আলোচনা সফল হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ সম্পর্কে জনাব সানি বলেন যে, তার দেশ এই নতুন জাতির সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। এই নবীণ দেশকে জাতিসংঘে আসন দানে ব্যর্থতার দরুন আমরা দুঃখিত। তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়া দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, জাতিসংঘে বাংলাদেশকে সদস্যপদ দান করা উচিত। তিনি আরও বলেন যে, তবে একইসঙ্গে আমরা আশা করি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যেকার অমীমাংসিত বিরোধ বিশেষভাবে যুদ্ধবন্দিদের প্রত্যাবর্তনের গুরুতর বিষয়টিও দ্রুততার সঙ্গে মীমাংসা করা সম্ভব এবং এই ভাবে উভয় দেশের মধ্যে স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ অবস্থান উন্মোচন করা যেতে পারে। বার্বাডোসের প্রতিনিধি সাধারণ পরিষদে বক্তৃতা প্রসঙ্গে সিমলা চুক্তিকে স্বাগত জানান। ভারত ও পাকিস্তান আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যেকার বিরোধ মীমাংসায় সমর্থ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, পশ্চিম গোলার্ধে বার্বাডোসই বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দান করেছেন। তিনি বলেন, তার দেশ জাতিসংঘকে এই মর্মে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন যে, চীনকে জাতিসংঘের বাইরে রাখার মতো ভুলের পুনরাবৃত্তি যেন না করে। তিনি বলেন, বার্বাডোস অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বসংস্থায় বাংলাদেশকে স্বাগত জানাতে ইচ্ছুক। একটি দেশ বাংলাদেশের বিরোধীতা করে। দেশটির নাম আলবেনিয়া। আলবেনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী সাধারণ পরিষদে অভিযোগ করেন যে, ভারত ও সেভিয়েট সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ পাকিস্তানের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে এবং জাতিসংঘ তার মোকাবিলা করতে সমর্থ হয় নাই। অতঃপর তিনি বলেন যে, এখন এই হামলা স্বীকার করার জন্য আমাদের বলা হচ্ছে।৯

রেফারেন্স: ৩ অক্টোবর ১৯৭২, দৈনিক ইত্তেফাক
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ