You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.10.03 | প্রাথমিক শিক্ষকদের যোগ্য মর্যাদা দান ও ভাগ্যোন্নয়নে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ | দৈনিক ইত্তেফাক - সংগ্রামের নোটবুক

প্রাথমিক শিক্ষকদের যোগ্য মর্যাদা দান ও ভাগ্যোন্নয়নে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ

যশোর। পূর্তমন্ত্রী জনাব মতিউর রহমান বলেন যে, যে মহৎ উদ্দেশ্যে সমগ্র জাতি চরম ত্যাগ স্বীকার করেছে, প্রাথমিক শিক্ষকদের দায়িত্ব হচ্ছে সে ব্যাপারে ছেলে-মেয়েদের অনুপ্রণিত করে তোলা। তিনি স্থানীয় তসবির মহল প্রেক্ষাগৃহে যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন করছিলেন। বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। প্রাথমিক শিক্ষকদের মহৎ পেশার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে মন্ত্রী বলেন যে, জাতি গঠনকারী হিসাবে তাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। মন্ত্রী স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রাথমিক শিক্ষকদের মূল্যবান অবদানের কথা উল্লেখ করেন। তিনি মন্তব্য করেন যে, অতীতে প্রাথমিক শিক্ষকরা সকল রাজনৈতিক আন্দোলনের আলোকবর্তিকা বহন করেছেন। গ্রাম অঞ্চলে প্রাথমিক শিক্ষকরাই একমাত্র শিক্ষিত সম্প্রদায়ের পর্যায়ভুক্ত। তারা গ্রামে গ্রামে জনমত গঠনে প্রভূত সাহায্য করেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। মন্ত্রী বলেন যে, বঙ্গবন্ধুর সরকার প্রাথমিক শিক্ষকদের ভাগ্যোন্নয়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সরকার চান যাতে প্রাথমিক শিক্ষকগণ অন্যান্য বৈদেশিক রাষ্ট্রের মতো সমাজের সম্মানজনক স্থান লাভ করতে পারেন। এই প্রসঙ্গে তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এডহক রিলিফ এবং চাকুরী হতে অবসর গ্রহণের বয়ঃসীমা ৫৫ হতে ৬০ বছরে বর্ধিত করার ব্যাপারে ইতোমধ্যেই ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে। তিনি বলেন, জনগণের চাহিদা পূরণের জন্য যতদিন পর্যন্ত উৎপাদন বৃদ্ধি না করা হবে, ততদিন পর্যন্ত বেতন বৃদ্ধির আন্দোলন করলেও সমস্যা সমাধান হবে না। যদি আমরা এই সমস্ত কারণ উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হই তাহলে বেতন বৃদ্ধির ফলে দেশের অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতির প্রবণতা দেখা দিবে। প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী আশ্বাস প্রদান করে। বলেন যে, এইগুলো শিক্ষা কমিশনের উপযুক্ত বিবেচনা লাভ করবে। চোরাচালান ও সমাজ বিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রবল জনমত গঠন এবং দেশের সমৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এই ব্যাপারে প্রশাসনয়লের সাথে সহযোগিতা করার জন্য মন্ত্রী প্রাথমিক শিক্ষদের প্রতি আহ্বান জানান। পূর্বাহ্নে যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক কাজী আবদুর রউফ যশোরে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করার দাবি জানান। যশোর বিমানবন্দরে আগমনের পর মন্ত্রীকে বিপুলভাবে সম্বর্ধনা জানানো হয়। পরে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পূর্বে মন্ত্রী সার্কিট হাউসে আওয়মী লীগ কর্মী, যশোরের গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সরকারি কর্মচারীদের এক সমাবেশে বক্তৃতা দেন।১২

রেফারেন্স: ৩ অক্টোবর ১৯৭২, দৈনিক ইত্তেফাক
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ