You dont have javascript enabled! Please enable it! 1981 | বাংলাদেশের শাসনতন্ত্রে 'রাষ্ট্রপতি ' | সাপ্তাহিক বিচিত্রা | ২০ নভেম্বর ১৯৮১ - সংগ্রামের নোটবুক

বাংলাদেশের শাসনতন্ত্রে ‘রাষ্ট্রপতি ‘ | সাপ্তাহিক বিচিত্রা | ২০ নভেম্বর ১৯৮১

আবদুল আজীম

১৯৭২ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে যে শাসনতন্ত্র বলবৎ হয় সেই সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন সংসদ সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে। সংবিধানের ৪৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ‘বাংলাদেশের একজন রাষ্ট্রপতি থাকবেন, যিনি দ্বিতীয় তফসিলে বর্ণিত বিধানাবলী অনুযায়ী সংসদ সদস্যগণ কর্তৃক নির্বাচিত হইবেন। ” দ্বিতীয় তফসিলের বিধানে বিস্তারিত ভাবে বলা হয়েছে কিভাবে নির্বাচন কমিশনার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠান করবেন। সংসদীয় গণতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে শেষবারের মত রাষ্ট্রপতির নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছিল ১৯৭৪ সালের ২৪ জানুয়ারী। সেই নির্বাচনে মোহম্মদউল্লাহ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। সংবিধান অনুযায়ী, পাঁচ বছরের জন্য তার রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত থাকার কথা। অর্থাৎ ১৯৭৯ সালের ২৬ জানুয়ারী পর্যন্ত মোহাম্মদ উল্লাহর রাষ্ট্রপতি থাকার কথা।

যদিও সংবিধানের ৪৮(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, “রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের অন্য সকল ব্যক্তির উর্ধ্বে স্থান পাবেন ও অন্য কোন আইনের দ্বারা তাকে প্রদত্ত ও তার উপর অর্পিত সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কর্তব্য পালন করবেন।” কিন্তু বাস্তবে ৪৮(৩) দফা অনুযায়ী তিনি এই সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদের (৩) দফা অনুসারে কেবল প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের ক্ষেত্র ছাড়া রাষ্ট্রপতি তার অন্য সকল দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করবেন। সংসদীয় গণতন্ত্রের রীতি অনুযায়ী সরকার পরিচালনার নিরঙ্কুশ ক্ষমতা থাকে প্রধানমন্ত্রীর হাতে।

সংবিধানের (দ্বিতীয় সংশোধন) আইন অনুযায়ী ১৯৭৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর জরুরী বিধানগুলো সংবিধানে সংযোজিত হয়েছিলো, যার দ্বারা দেশে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতি লাভ করেছিলেন। কিন্তু এক্ষেত্রেও শর্ত আরোপ করে বলা হয়েছিল, “তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ ঘোষণার বৈধতার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি-সাক্ষরের প্রয়োজন হইবে।” (১৪) ক অনুচ্ছেদের (৯) নং দফা অনুযায়ী অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর অমতে যদি রাষ্ট্রপতি দেশে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেন তাহলে আইনানুযায়ী সেটা বৈধ হবে না। ১৯৭৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর দেশে যে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয় রাষ্ট্রপতির নামে, প্রকাশিত সরকারী গেজেটে সে ঘোষণার পাশেই মুদ্রিত ছিল “প্রতি-সাক্ষরিত শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী। “

সংবিধানের ৫০ অনুচ্ছেদের (৩) দফা অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি “স্পীকারের উদ্দেশ্যে সাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে” প্রয়োজনে পদত্যাগ করতে পারেন। অথবা সংবিধানের ৫২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, “এই সংবিধান লঙ্ঘন বা গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগে রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসিত করা যাইতে পারে। ” অথবা ৫৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, “শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যের কারণে রাষ্ট্রপতিকে তার পদ থেকে অপসারিত করা যাইতে পারিবে। ” মোহাম্মদ উল্লাহ রাষ্ট্রপতির পদ থেকে অপসারিত হয়েছিলেন ১৯৭৫ সালে ২৫ জানুয়ারী। তবে এক্ষেত্রে সংবিধানের কোন অনুচ্ছেদ,দফা বা ধারা অনুযায়ী অপসারিত হননি। অপসারিত হয়েছিলেন সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক ও সংবিধান বহির্ভূতভাবে।

সংবিধানের ৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে পার্লামেন্টারি গণতন্ত্র বাতিল করে দেয়া হয়। এর স্থান নেয় হুকুমতান্ত্রিক সরকার। রাষ্ট্রপতি হলেন সর্বেসর্বা। ৪র্থ সংশোধনী সংসদে পাশ হবার পর রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য পেশ করা হলো। কারণ ৪র্থ সংশোধনীর ৩৪(ক) অনুযায়ী ‘এই আইন প্রবর্তনের জন্য অব্যবহিত পূর্বে যিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির পদে থাকিবেন না এবং রাষ্ট্রপতির পদ শুন্য হইবে।” এইভাবে জনাব মোহাম্মদ উল্লাহকে সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিকভাবে সরিয়ে দেয়া হলো ও তার পদ শুন্য বলে ঘোষণা করা হলো।

৪র্থ সংশোধনীর পর সংবিধানের ৪৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, “বাংলাদেশে একজন রাষ্ট্রপতি থাকিবেন, যিনি প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আইনানুযায়ী নির্বাচিত হইবেন। (২) রাষ্ট্রপ্রধান রূপে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের অন্য সকল ব্যক্তির উর্ধ্বে স্থান লাভ করিবেন।” কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, ৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের সব ধরনের রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। ১১৭ ক অনুচ্ছেদের (১) দফায় বলা হয়েছে, “রাষ্ট্রপতির নিকট যদি সন্তোষজনক ভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এই সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে বর্ণিত রাষ্ট্র পরিচালনায় মূলনীতি সমূহের কোন একটি পরিপূর্ণভাবে কার্যকর করার উদ্দেশ্যে অনুরূপ করা প্রয়োজন, তাহলে তিনি আদেশ দ্বারা নির্দেশ দিতে পারবেন যে, রাষ্ট্রে শুধু একটি রাজনৈতিক দল (অতঃপর জাতীয় দল নামে অভিহিত) থাকবে। (২) যখন (১) দফার অধীন কোন আদেশ প্রণীত হয়, তখন রাষ্ট্রের সকল রাজনৈতিক দল ভেঙ্গে যাবে এবং রাষ্ট্রপতি জাতীয় দল গঠন করার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

(৩) দফা অনুযায়ী, ” জাতীয় দলের নামকরণ কর্মসূচী, সদস্যভুক্তি, সংগঠন, শৃঙ্খলা, অর্থ সংস্থান এবং কর্তব্য ও দায়িত্ব সম্পর্কিত সকল বিষয় রাষ্ট্রপতির আদেশ দ্বারা নির্ধারিত হইবে।” (৫) (ক) দফা অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা যদি নির্ধারিত তারিখের মধ্যে জাতীয় দলের সদস্য না হন, তাহলে সেই তারিখের পরই সেই সংসদ আসন শুন্য হয়ে পড়বে। (৫) (খ) দফা অনুযায়ী, যদি তিনি জাতীয় দলের দ্বারা রাষ্ট্রপতি বা সংসদ সদস্য নির্বাচনে প্রার্থী রূপে মনোনীত না হন, তা হইলে অনুরূপ নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি বা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন না; (গ) জাতীয় দল ছাড়া, অন্য কোন রাজনৈতিক দল গঠন করিবার বা অনুরূপ দলের সদস্য হইবার কিংবা অন্যভাবে অনুরূপ দলের কার্যকলাপে অংশ গ্রহণ করিবার অধিকার প্রাপ্ত হইবেন না।” অর্থাৎ জাতীয় দলের মনোনীত প্রার্থী ছাড়া অন্য কেউ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। আওয়ামী লীগকে আইনানুযায়ী, ক্ষমতাচ্যুৎ করার অধিকার দেশের জনগণের থাকলো না। এই আইন প্রণীত হয় আওয়ামী লীগের শাসন আমলে, প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর।

প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ২৪ জানুয়ারী এক ঘোষণার মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ বা বাকশাল গঠন করেন। এবং নিজেই দলের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। ঐদিন থেকেই বাংলাদেশের অন্যান্য দল নিষিদ্ধ হয়ে যায়। ১৭ এপ্রিল, এক সরকারী ঘোষণায় বলা হল, ‘২৫ এপ্রিলের মধ্যে বাকশালের সদস্য হতে হবে। যারা সদস্য হবেন না, তাদের সংসদের সদস্য পদ শুন্য হয়ে পড়বে।

১৯৭৫ সালের ১৩ জুন, প্রেসিডেন্ট জারী করলেন, ডিক্লারেশন বাতিল অধ্যাদেশ। এই অধ্যাদেশের ফলে চারটি দৈনিক পত্রিকা ছাড়া সকল দৈনিক পত্রিকা বন্ধ হয়ে যায়। সংসদে এই বিল পাশ হয়েছিলো ১১ জুলাই। ‘৭৫ সালের ২১ জুলাই বাংলাদেশ

বাকশাল শাসনামলে রাষ্ট্রপতির পদের জন্য কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। মোহাম্মদ উল্লাহকে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে অগণতান্ত্রিকভাবে সরিয়ে দেয়ার পর রাষ্ট্রপতি হন শেখ মুজিবুর রহমান। শাসনতন্ত্রের বিধান হলো উপেক্ষিত। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারী রাষ্ট্রপতি হিসেবে স্পীকারের কাছে শপথ গ্রহণ করেন। এই দায়িত্ব পালন করেন ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত।

১৯৭৫ সালের ২৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ২২ আগস্ট ইত্তেফাক ও সংবাদ তাদের মালিকরা ফেরত পান। ১ সেপ্টেম্বর, বাকশাল বাতিল করা হয়।

১৯৭৮ সালের দ্বিতীয় ঘোষণাপত্র আদেশ ৪ – এর দ্বিতীয় তফসীল বলে বাংলাদেশের সংবিধান বহুদলীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের শাসনতন্ত্রে রূপ লাভ করলো। ভবিষ্যতে জনগণের মতামত ছাড়া যেন সংবিধানের বিশেষ কয়েকটি অনুচ্ছেদ বা দফার পরিবর্তন না করা যায়, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা হিসেবে সংবিধানের ১৪২ (১ক) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ১৪২(১) দফায় যা বলা হয়েছে তা সত্ত্বেও এই সংবিধানের প্রস্তাবনার অথবা ৮ নং অনুচ্ছেদ (রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি সমূহ), ৪৮ নং অনুচ্ছেদ (রাষ্ট্রপতি), ৫৬ নং অনুচ্ছেদ (প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী কর্তৃত্ব), ৫৮ নং অনুচ্ছেদ (আইন প্রণয়ন পদ্ধতি), ৯২ক নং অনুচ্ছেদ (কতিপয় ক্ষেত্রে ব্যয়ের কর্তৃত্ব প্রদান) অথবা ১৪২ নং অনুচ্ছেদের (সংবিধান সংশোধন) কোন বিধানবলীর সংশোধনের জন্য সংসদে বিল পাশের পর রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য তার কাছে পেশ করলে তিনি সাত দিনের মধ্যে গণভোটে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন এবং গণভোটের ফলাফল রাষ্ট্রপতি সম্মতি দিয়েছেন কিংবা সম্মতিদানে বিরত থাকবেন বলে গণ্য হবে।

সংবিধানের ৪৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, “বাংলাদেশের একজন রাষ্ট্রপতি থাকিবেন, যিনি প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আইনানুযায়ী নির্বাচিত হইবেন।” ১৯৭৮ সালে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

সংবিধানের ৫৫(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, “রাষ্ট্রপতির পদ শুন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে ক্ষেত্রমত শুন্য পদে নির্বাচিত নতুন রাষ্ট্রপতি কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত উপ- রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপতি রূপে কার্য করিবেন।” আবার ১২৩ অনুচ্ছেদের (২) দফা অনুযায়ী, “মৃত্যু, পদত্যাগ বা অপসারণের ফলে রাষ্ট্রপতির পদ শুন্য হইবার একশত আশি দিনের মধ্যে তাহা পূর্ণ করিবার জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।”

প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালের ৩০ মে নৃশংসভাবে নিহত হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির পদটি শুন্য হয়ে যায়। এবং সেদিন থেকেই উপ-রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার ৫৫(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সংবিধান অনুযায়ী ১৮০ দিনের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতির নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার কথা। সেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো ১৫ নভেম্বর। ৮ম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন বিচারপতি আবদুস সাত্তার। তার মেয়াদকাল ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত।

***

বাংলাদেশের সাবেক সাতজন প্রেসিডেন্ট। এর মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমান দুইবার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেনঃ (১) শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ এপ্রিল ‘৭১ – ১২ জানুয়ারী, ‘৭২ ও ২৫ জানুয়ারী, ‘৭৫ – ১৫ আগস্ট, ‘৭৫); (২) বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী (১২ জানুয়ারী ‘৭২ – ২৪ ডিসেম্বর, ‘৭৩) ; মোহাম্মদ উল্লাহ (২৪ ডিসেম্বর, ‘৭৩ – ২৫ জানুয়ারী, ‘৭৫); খন্দকার মোশতাক আহমদ (১৫ আগস্ট, ‘৭৫ – ৬ নভেম্বর, ‘৭৫) ; বিচারপতি এ এম সায়েম (৬ নভেম্বর ‘৭৫ – ২১ এপ্রিল, ‘৭৭) ও জিয়াউর রহমান (২১ এপ্রিল, ‘৭৭ – ৩০ মে, ‘৮১)।

***

[pdf-embedder url=”https://songramernotebook.com/wp-content/uploads/securepdfs/2021/04/1981.11.20-bichitra-1.pdf” title=”1981.11.20 bichitra”]