You dont have javascript enabled! Please enable it!

আওয়ামী লীগ খন্ডবিখন্ড

ঢাকা, ২৪ শে আগস্ট—আওয়ামী লীগের উপদলীয় কোন্দল চরম পর্যায়ে উপনীত হইয়া বর্তমানে আওয়ামী লীগকে বস্তুতঃ দুইটি পৃথক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করিয়াছে। এই দ্বিধাবিভক্ত রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের একদিকে পিডিএমপন্থীরা, অন্যদিকে ছয়দফা ধ্বজাধারীবৃন্দ।
ছয়দফা পন্থীদের পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের কাউন্সিল বৈঠকের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে গতকল্য বুধবার পাকিস্তানে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহক কমিটি বাতিল করিয়া দিয়াছে।
গত বুধবার পাকিস্তান আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহক কমিটি আওয়ামী লীগ গঠনতন্ত্রের ৯ ধারার ২নং ও ৩নং উপ-ধারাবলে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহক কমিটি বাতিল করিয়া দিয়াছেন এবং মওলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগীশকে চেয়ারম্যান ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব মুজিবর রহমানকে সেক্রেটারী করিয়া ২৪ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ এডহক কমিটি গঠন করিয়াছেন। ইহা ছাড়া, কমিটি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহক কমিটির সিদ্ধান্ত ভঙ্গ ও গঠনতন্ত্রবিরােধী কার্যকলাপের জন্য প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদিকা মিসেস আমেনা বেগমকে কেন আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ হইতে বহিষ্কার করা হইবে না, তাহার কারণ দর্শানোের নােটিশ প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
গত বুধবার পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব জহিরুদ্দীনের স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় যে, গত ২৪ শে এপ্রিল প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের এক সভায় ৬-দফা ও ৮-দফার সমন্বয়ে সাধারণ কর্মসূচী গ্রহণের জন্য একটা আলােচনা কমিটি গঠন করা হয়। ইহা ছাড়া পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহক কমিটির ২০শে মে’র সভায় পি-ডি-এমএর আহ্বানে সক্রিয় সাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কিন্তু প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদিকা উপরােক্ত সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করিয়াছেন এবং পাকিস্তান আওয়ামী লীগ সভাপতির অনুরােধ উপেক্ষা করিয়া প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহক কমিটির সভা আহ্বান করেন নাই। ইহা। ছাড়া তাহারা পিডিএম-এর সভা বানচাল করার চেষ্টা করিয়াছেন। তদুপরি এ সকল কর্মকর্তা আওয়ামী লীগের বিধি লংঘন করিয়া ১৯শে আগস্ট প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের একটি ভুয়া কাউন্সিল অধিবেশন আহ্বান করিয়া আওয়ামী লীগের ১৪ জন প্রবীণ ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্যকে দল হইতে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত করিয়াছেন বলিয়া বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয় যে, পাকিস্তান আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহক কমিটির তথাকথিত কাউন্সিল অধিবেশনে গৃহীত ১৪জন সদস্যের সাসপেনশন সম্পর্কিত প্রস্তাব বাতিল ঘােষণা করিয়া সংশ্লিষ্ট সদস্যদের আওয়ামী লীগের সদস্যপদে বহাল রাখিয়াছেন।

রেফারেন্স: দৈনিক পয়গাম, ২৫ আগস্ট ১৯৬৭

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!