You dont have javascript enabled! Please enable it!

নয়া শিক্ষা ব্যবস্থায় জনগণের আশা মেটাতে হবে- বঙ্গবন্ধু

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বংশধরদের চাহিদা অনুযায়ী বাস্ত বানুগ সুপারিশ ত্বরান্বিত করার জন্যে শিক্ষা কমিশনের সদস্যেদের নির্দেশ দিয়েছেন। রোববার সকালে গণভবনে অনুষ্ঠিত শিক্ষা কমিশনের পূর্ণাঙ্গ বৈঠকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দিচ্ছিলেন।তিনি বলেন, শিক্ষা কমিশনের সুপারিশ সমূহে জনগণের, বিশেষ করে দেশের তরুণ সমাজের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকতে হবে। দেশের তরুণ সমাজকে কার্যকরী ও অর্থপূর্ণ শিক্ষায় প্রকৃত শিক্ষিত করে তোলার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে বঙ্গবন্ধু বলেন দেশের, তরুণ সমাজকে এমন বাস্তবায়ানুগ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে যাতে করে কেবল তাদের এক উজ্জলতর ভবিষ্যতের দিকেই কেবল নিয়ে যাবে না বরং তা দেশের পুনর্গঠনের কাজে আত্মনিয়োগ করতে তাদের উৎসাহিত করবে।
বাসসের খবরে উল্লেখ করা হয় যে, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিক্ষা কমিশনের সদস্যদের একথা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে, শিক্ষা কমিশন সম্পূর্ণ স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থা এবং পুনঃকমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তার কাজ করে যাবে। রোববার সকালে গণভবনে ড. কুদরত-ই-খুদার নেতৃত্বে গঠিত শিক্ষা কমিশনের সঙ্গে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী একথা ঘোষণা করেন। ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ এবং শিক্ষা দফতরের পদস্থ কর্মচারীগণ গণভবনের এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষা দফতরের সূত্রে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা কমিশনকে তার কাজে সম্ভাব্য সবরকম সাহায্য ও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। শিক্ষা কমিশনের সঙ্গে দুই ঘণ্টা ধরে দীর্ঘ আলোচনার সময় বঙ্গবন্ধু উল্লেখ করেন যে, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে নতুন করে ঢেলে সাজানো হবে। এটাই সবাই প্রত্যাশা করে। তিনি আশা করেন শিক্ষা কমিশন জনগণের এই ইচ্ছার কথা স্মরণ রাখবে। বঙ্গবন্ধু উল্লেখ করেন যে দেশের নতুন শিক্ষা ব্যবস্থাকে এমন ভাবে গঠন করতে হবে যাতে মানবিক মূল্যবোধের উৎকর্ষ সাধিত হয় এবং সেই সঙ্গে উৎপাদনের সর্বক্ষেত্রে নতুন গতিধারা যেন সংযোজিত হয়। দেশের দ্রুত জনসংখ্যার বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে নয়া কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তার প্রতি কমিশন বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। দেশের নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা কারিগরি ও পেশাগত শিক্ষার ওপর এবং কৃষি ও উন্নয়নের অন্যান্য ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক গতিধারায় নেতৃত্বে উপযোগী করে তরুণসমাজকে গড়ে তোলার বিশেষ প্রয়োজনীয়তার প্রতি বঙ্গবন্ধু গুরুত্ব আরোপ করেন। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আশা প্রকাশ করেন যে, শিক্ষা কমিশন দেশের জন্য নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা গঠনের কাজে কেবলমাত্র যে আশু প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করবেন তা নয় বরং দেশের ভবিষ্যৎ চাহিদার কথাও বিবেচনা করবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মোট জনশক্তি ও সম্পদের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করতে হবে।৮৮

রেফারেন্স: ২৪ সেপ্টেম্বর ১৯৭২, দৈনিক বাংলা
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!