দারিদ্র্য দূরীকরণের একমাত্র পন্থা সমাজতন্ত্র – আবু সাঈদ চৌধুরী
খুলনা। আজ বিকেলে এখানে রাষ্ট্রপ্রধান বিচারপতি জনাব আবু সাঈদ চৌধুরী সমাজতন্ত্রের মাধ্যমে দেশের সম্পদের সমবণ্টনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশ থেকে দারিদ্র্য দূরীকরণের এটাই একমাত্র পথ। আজ বিকেলে এখানে সার্কিট হাউসে বিভিন্ন স্তরের লোকের সমাবেশে ভাষণ দানকালে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, সকল পর্যায়ে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কঠোর পরিশ্রম করাই এই মুহূর্তের বড় কাজ। তিনি বলেন পর্যাপ্ত উৎপাদন না থাকলে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা তথ্য সম্পদের সমবণ্টনের কোনো পরিকল্পনাই সফল হবে না। একদিনের সফরে রাষ্ট্রপ্রধান আজ বিকেলে যশোর থেকে এখানে আগমন করেন। কৃষিমন্ত্রী শেখ আব্দুল আজিজ, এমসিএগণ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও পদস্থ সরকারি কর্মচারীরা তাকে সম্বর্ধনা জানান। পুলিশের একটি দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে।
সেনা সমাবেশে ভাষণ : যশোর থেকে বাসস পরিবেশিত অপর এক খবরে প্রকাশ, রাষ্ট্রপ্রধান বিচারপতি জনাব আবু সাঈদ চৌধুরী আজ এখানে বলেন যে আঞ্চলিক সংহতি, জাতীয় স্বাধীনতা ও দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি বজায় রাখার জন্য একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী প্রয়োজন। জাতীয় গৌরব হিসেবে দেশের সশস্ত্রবাহিনীকে পুনরায় গড়ে তোলার জন্য বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সরকার সম্পদ সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপই গ্রহণ করবে। যশোর সেনানিবাসে সৈনিকদের সমাবেশে ভাষণদানকালে রাষ্ট্রপতি এ আস্থা প্রকাশ করেন। যশোর সেনানিবাসের অনুষ্ঠানে বন ও মৎস্য। দফতরের মন্ত্রী জনাব সোহরাব হোসেনও বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীর চীফ অব স্টাফ কর্নেল সফিউল্লাহও উপস্থিত ছিলেন। যশোর ক্যান্টনমেন্ট এর বিগ্রেড কমান্ডার লে. কর্নেল এম এ মঞ্জুরও সমাবেশে ভাষণ দেন। রাষ্ট্রপ্রধান সশস্ত্রবাহিনী পুনর্গঠন ও সেনাবাহিনীকে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ও ব্যাখ্যা করেন। তিনি আরো বলেন, দেশ রক্ষার জন্য সুশৃঙ্খল ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী একান্তভাবেই প্রয়োজন।
বাংলাদেশ জাতিসংঘে যোগ্য স্থান লাভ করবে : যশোর থেকে আমাদের সংবাদদাতা জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপ্রধান বিচারপতি জনাব আবু সাঈদ চৌধুরী আজ এখানে ঘোষণা করেন যে শীগগিরই বাংলাদেশ জাতিসংঘে তার যোগ্য সম্মান লাভ করবে। বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি লোকের ন্যায়সঙ্গত দাবিকে কেউই ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। রাষ্ট্রপ্রধান আজ সকালে যশোর সার্কিট হাউজে বিভিন্ন স্তরের লোকের সমাবেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন। রাষ্ট্রপ্রধান যশোর বিমানবন্দরে অবতরণ করলে বিপুল সংখ্যক লোক তাকে সম্বর্ধনা জানায়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে।৪০
রেফারেন্স: ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৭২, দৈনিক বাংলা
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ