মিল চালু করতে সরকার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে- সৈয়দ নজরুল ইসলাম
অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ নজরুল ইসলাম শিল্প এলাকার দাঙ্গার বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য দেশের সকল রাজনৈতিক ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধায় গণভবনে স্মারকলিপি পেশের জন্য উপস্থিত সর্বদলীয় মিছিলকারীদের উদ্দেশ্যে সৈয়দ নজরুল ইসলাম এই আহ্বান জানান। অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন যে, আদমজীর দাঙ্গা দমনে সরকার যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। আদমজী মিল চালু ও উৎপাদন শুরুর জন্যে যা কিছু করা দরকার, তার ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারণ, দেশের বৃহত্তম শিল্প প্রতিষ্ঠান আদমজী মিল চালু না থাকলে আমরা বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে বঞ্চিত থাকবো। সৈয়দ নজরুল বলেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে স্বাধীনতা আন্দোলনে এদেশের মানুষ প্রাণ দিয়েছে। আমরা তখন কেউ কোনো অঞ্চল বা জেলার লোক হিসেবে বিবেচিত হয়নি। তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশের প্রগতি ও উন্নতিকে ব্যহত করতে চায় তারাই নিজেদের স্বার্থে দাঙ্গা সৃষ্টি করে। অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী বলেন, একা সরকারের পক্ষে শিল্প এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা অক্ষুন্ন রাখা ও দাঙ্গা প্রতিরোধ সম্ভব নয়। এ জন্যে শ্রমিকদের একতা অবশ্যই প্রয়োজন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে এলেই শিল্প এলাকায় শান্তি বজায় রেখে জাতি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি কায়েম করা সম্ভব। অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতাকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আব্দুল মান্নান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জসাব জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব জনাব তোফায়েল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি চৌধুরী হারুনুর রশিদ সর্বদলীয় স্মারকলিপিটি অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ নজরুল ইসলামের হাতে অর্পণ করেন। গণভবনে সর্বদলীয় নেতৃবৃন্দের সাথে অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব স্মারকলিপির ওপর আধ-ঘণ্টাকাল আলাপ আলোচনা করেন। সর্ব দলীয় নেতৃবৃন্দের মাঝে কমরেড আব্দুস সামাদ, কমরেড খোকা রায়, কমরেড মোহাম্মদ ফরহাদ, বেগম মতিয়া চৌধুরী, শ্রী পঙ্কজ ভট্টাচার্য, জনাব সাইফুদ্দিন আহম্মদ মানিক, জনাব নুরুর রহমান, জনাব মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম, জনাব আবদুল কাইয়ুম মুকুল ও মিসেস মালেকা বেগম উপস্থিত ছিলেন।১৭
রেফারেন্স: ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭২, দৈনিক বাংলা
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ