You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.09.05 | পিন্ডির স্বীকৃতি ও আলোচনা যুগপৎ হতে পারে- ইন্দোনেশীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড: আদম মালিক | দৈনিক বাংলা - সংগ্রামের নোটবুক

পিন্ডির স্বীকৃতি ও আলোচনা যুগপৎ হতে পারে- ইন্দোনেশীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড: আদম মালিক

ইন্দোনেশীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড: আদম মালিক বলেছেন যে, পাকিস্তান কর্তৃক বাংলাদেশ কে স্বীকৃতি দান এবং উভয় দেশের নেতৃবৃন্দের মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠান এই দুটি বিষয়ে যুগপৎ ভাবে সম্পন্ন হতে পারে ইন্দোনেশিয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সাথে আলোচনা করছিলেন। তিনি চারদিন ব্যাপি সফরের উদ্দেশ্যে গতকাল দুপুরে ঢাকায় এসে পৌঁছেন। বিমানবন্দরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আব্দুস সামাদ তাকে অভ্যর্থনা জানান। এক প্রশ্নের জবাবে জনাব। আদম আলী বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য কোনো প্রকার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব নিয়ে আসার কথা অস্বীকার করেন। তবে তিনি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যাপারে তার দেশ প্রস্তুত আছে বলে পুনরুল্লেখ করেন। তিনি বলেন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করতে আমরা প্রস্তুত আছি। অবশ্য যদি আমাদের একাজ করতে বলা হয়। পাকিস্তান কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের যে নীতি বাংলাদেশ গ্রহণ করেছেন তা যুক্তিসঙ্গত বলে তিনি মনে করেন। এক প্রশ্নের জবাবে ড: আদম মালিক বলেন যে বাংলাদেশে অবস্থান কালে তিনি পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে কীভাবে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত করা যায় সে সম্পর্কে এখানকার নেতাদের সাথে বিশেষ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদের সাথে আলোচনা করবেন। তিনি বলেন, নতুন স্বাধীনতা প্রাপ্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জাতিসংঘের সদস্য হওয়ার পূর্ণ অধিকার রয়েছে। বাংলাদেশকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয় জাতিসমূহের সংস্থার সদস্য হিসেবে ইন্দোনেশিয়া গ্রহণ করতে রাজি আছে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে ড: আদম মালিক বলেন, এই বিষয়টি বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল। ইন্দোনেশীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান যে, বাংলাদেশে অবস্থান কালে তিনি উভয় দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা, বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক বিনিময় সম্পর্কে আলোচনা করবেন। তবে এ ব্যাপারে তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব নিয়ে আসেননি বলে জানান। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্দোনেশীয়া সফরের সময় এসব ব্যাপারে আলোচনা হয়েছিল। এই আলোচনার ফলাফল কীভাবে বাস্তবায়িত করা যায়। সেসব বিষয়ে কথাবার্তা হবে। ড: আদম মালিক বলেন, তার বাংলাদেশে সফর উভয় দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বের বন্ধন আরো সুদৃঢ় করবে। তিনি বলেন, আমাদের দুদেশের মধ্যে কোনো সমস্যা নেই বাংলাদেশ স্বাধীন হবার আগেও আমাদের মধ্যে ভাতৃত্বের সুসম্পর্ক ছিল এখনো আছে। তিনি বলেন আমি বাংলাদেশে আসতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত। ড: আদম মালিকের সঙ্গে ইন্দোনেশীয়ার ডিরেক্টর জেনারেল (রাজনৈতিক বিষয়ক) মি. আরবিআইএম জাজাদিনিনগ্যাট, স্টাফ অব ডেলিগ্যশন মি: টেষ্ণু মায়মুন হাবজাহ দক্ষিণ এশিয়া সংক্রান্ত ডিরেক্টর মি: এসওএস বিসুধা এবং ঢাকায় নিযুক্ত চার্জদা এফেয়ার্স সুপ্যারী জোকরোহরতনো ঢাকায় এসেছেন। বিমানবন্দরে ঢাকাস্থ ইন্দোনেশীয় দূতাবাসের কর্মকর্তাগণও উপস্থিত ছিলেন।
সামাদ-মালিক বৈঠক : বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জনাব আব্দুস সামাদ ও ড: আদম মালিক এক বৈঠকে মিলিত হন। প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে উভয়ের মধ্যে আলোচনা হয়। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, এটা সৌজন্য সাক্ষাৎকার। উভয়ের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে উভয়ের মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হবে। বিকেলে তিনি বাণিজ্যমন্ত্রী জনাব এম আর সিদ্দিকীর সাথেও সাক্ষাৎকারে মিলিত হন।১৮

রেফারেন্স: ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭২, দৈনিক বাংলা
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ