বাংলাদেশকে সদস্যপদ দানের প্রশ্নে চার শক্তির উদ্যোগ
জাতিসংঘ। বাংলাদেশের সদস্য পদ দানের সুপারিশ সম্বলিত চার শক্তির একটি খসড়া প্রস্তাব আজ স্বস্তি পরিষদে আলোচনার জন্য উঠছে। আর এই প্রস্তাব উত্থাপনের পর বিশ্ব সংস্থা ১৫ সদস্যর এই পরিষদে চীন হয়ত তার প্রথম ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে যাচ্ছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন, ভারত ও যুগোশ্লোভিয়া গত বুধবার এই খসড়া প্রস্তাবটি পেশ করেন। এর একদিন আগে চীন যে খসড়া প্রস্তাব পেশ করে তাতে গত ডিসেম্বরে সাধারণ পরিষদে গৃহীত প্রস্তাব পুরোপুরি কার্যকর না করা পর্যন্ত বাংলাদেশের সদস্যপদ দানের প্রশ্ন মুলতবী রাখার দাবি জানানো হয়। এসব প্রশ্নে আজ স্বস্তি পরিষদের বৈঠকে শক্তি পরীক্ষা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। পরিষদের এই অধিবেশনে বিগত ডিসেম্বরে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় বিভিন্ন শক্তির মধ্যে যে লড়াই চলে তার প্রতিফলন ঘটবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এই যুদ্ধের পর বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ঐ সময় চীন পাকিস্তানকে সর্বাত্তক সমর্থন জানায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও পাকিস্তানের পক্ষে ছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভারতকে সমর্থন করেন। বাংলাদেশকে বিশ্ব সংস্থার সদস্যপদ দানের জন্য চার শক্তি যে খসড়া প্রস্তাব পেশ করেছেন তার পেছনে সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন রয়েছে বলে যানা গেছে। পিকিং জাতিসংঘে আসন লাভের পর এই হয়ত প্রথমবার ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে চলেছে। চীন বলেছে যে, বর্তমানে চীন কোনো অবস্থাতেই বাংলাদেশকে সদস্যপদ দানের প্রস্তাব সমর্থন করবে না। ওয়াকিফহাল মার্কিন সূত্রে বলা হয় যে, এই বক্তব্য থেকে চীনের ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগের একটি নিশ্চিত আভাস পাওয়া যাচ্ছে। চীনের ব্যাখ্যা হচ্ছে যে, বাংলাদেশ জাতিসংঘের প্রস্তাব পুরোপুরি কার্যকরী করেন নি। এই প্রস্তাব অনুসারে ৮০ হাজার যুদ্ধবন্দি ও দশ হাজার বেসসামরিক নাগরিক প্রত্যার্পণ করা প্রয়োজন বলে চীন বায়না ধরেছে। জাতিসংঘে সদস্যপদ দান বিষয়ক পরিষদ কমিটির কয়েকটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে ব্যর্থ আলাপ আলোচনার পর এই খসড়া প্রস্তাব দুইটি পেশ করা হয়। কমিটির রির্পোট এখনো জানা না গেলেও একথা সঠিক যে, কমিটিতে বাংলাদেশকে সদস্যপদ দানের পক্ষে ১১ টি দেশ সমর্থন দান করে। আজ চার শক্তির খসড়া প্রস্তাবে বলা হয় যে, আবেদন পত্রটি পরীক্ষার স্বস্তি পরিষদ বাংলাদেশকে সদস্যপদ দানের জন্য সাধারণ পরিষদের নিকট সুপারিশ করেছে।৮২
রেফারেন্স: ২৪ আগস্ট ১৯৭২, দৈনিক ইত্তেফাক
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ