বন্ধকী জমি খালাসের জন্য সরকার কৃষকদের সাহায্য করবে
বন্ধকী জমি খালাস করার ব্যপারে দরিদ্র কৃষকগুলোকে সহায়তা করার জন্য সরকার ৭২ সালের জমিদারি উচ্ছেদ ও প্রজাস্বত্ব (দ্বিতীয় সংশোধনী) আদেশ দ্বারা ৫০ সনের জমিদারি উচ্ছেদ ও প্রজাস্বত্ব আইনের ৯৫ ধারা সংশোধন এবং উক্ত আইনে নতুন ধারা সংযোজন করেছেন বলে এক সরকারি প্রেসনোটে প্রকাশ। প্রেসনোটে বলা হয়েছে যে, জমিদারি উচ্ছেদ ও প্রজাস্বত্ব আইনের ৯৫ ধারার খাই খালাসী বন্ধকভুক্ত কৃষি জমি নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে ফেরত পাবার বিধান থাকলেও তা ফেরত পাবার সহজ কোনো পন্থা নির্ধারিত ছিল না। এটাও জানা গেছে যে, অনেকক্ষেত্রে ঋণদাতাগণ। অন্যায় লোভের বশবর্তী হয়ে ৯৫ ধারার বিধান সমূহকে ফাকি দিয়ে জমি আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে নানারূপ উপায়ে দরিদ্র কৃষকগণকে টাকা ধার দিয়ে তাদের জমি নিজেদের ভোগ দখলে নিয়ে আসেন। এই রূপে উক্ত ঋণদাতাগণ অনেক জমি আত্মসাৎ করেছেন বা করবার অপেক্ষায় আছেন। উচ্ছেদ ও প্রজাস্বত্ব আইনের ৯৫ ধারা সংশোধন এবং উক্ত আইনের নতুন ধারা (৯৫-ক ধারায়) সংযোজন করা হয়েছে। উক্ত সংশোধনী আদেশটি ১৯৭২ সনের ৩ আগষ্ট তারিখের অতিরিক্ত বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত হয়েছে। উক্ত সংশোধনী আদেশের বিষয়বস্তু নিন্মে দেয়া হলো :
১। কোনো কৃষি জমির খাই খালাসী বন্ধক গ্রহীতা যদি ৯৫ ধারার বিধান অনুযায়ী মেয়াদ মধ্যে উক্ত জমি বন্ধকদাতাকে ফেরত দিতে অস্বীকার করেন, তবে বন্ধকদাতা উক্ত জমি ফেরত পাবার জন্য মহকুমা প্রশাসকের নিকট দরখাস্ত করতে পারবেন। এ রূপ দরখাস্ত পাইলে মহকুমা প্রশাসক স্থির করবেন যে বন্ধক গ্রহীতা অবশিষ্ট মেয়াদ কালের জন্য কত টাকা পাবার অধিকারী এবং উক্ত টাকা দরখাস্তকারী প্রদান করলে তিনি বন্ধকী জমি দরখাস্তকারীর দখলে ছেড়ে দিতে আদেশ দিবেন। উক্ত আদেশ অনুসারে বন্ধক গ্রহীতা আপোষে জমি ছেড়ে না দিলে মহকুমা প্রশাসক প্রয়োজন হলে বল প্রয়োগ দ্বারা তাকে জমি হতে উচ্ছেদ করে দরখাস্তকারীকে জমি দখল দিবেন।
২। যদি কোনো কৃষি জমি এমন কোনো ভাবে হস্তান্তর করা হয় বা হয়ে থাকে যার ফলে হস্তান্তর গ্রহীতা কোনো নির্দিষ্ট কালের জন্য উক্ত জমি ভোগ দখল করার অধিকার লাভ করেন তা হলে হস্তান্তর সংক্রান্ত দলিলে যাই থাকুক না কেন এবং এরূপ হস্তান্তর ১৯৭২ সালের ৩ আগষ্ট তারিখের পূর্বেই হোক বা পরেই হোক, ঐরূপ হস্তান্তর সাত বছরের অনধিকালের জন্য পূর্ণ খাই খালাসী বন্ধক বলে গণ্য হবে। এবং ৯৫ ধারার বিধান সমূহে এতে প্রযোজ্য হবে।৭৮
রেফারেন্স: ২৩ আগস্ট ১৯৭২, দৈনিক ইত্তেফাক
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ