You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.08.18 | যুদ্ধাবস্থার ন্যায় জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সংগ্রহের চেষ্টা চালানো হচ্ছে | দৈনিক ইত্তেফাক - সংগ্রামের নোটবুক

যুদ্ধাবস্থার ন্যায় জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সংগ্রহের চেষ্টা চালানো হচ্ছে

খাদ্যমন্ত্রী শ্রী ফণী ভূষন মজুমদার বলেন, সরকার যুদ্ধাবস্থার অনুরূপ জরুরি অবস্থার ভিত্তিতে বিভিন্ন বন্ধু রাষ্ট্রের নিকট থেকে খাদ্য সংগ্রহের প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। শুক্রবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী শ্রী মজুমদার উপরোক্ত মন্তব্য করেন। আগামি ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩০ লক্ষ টন খাদ্যদ্রব্যের প্রয়োজন। সরকার ইতোমধ্যে ভারত, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, বার্মা, জাপান ও থাইল্যান্ড থেকে ২৫ লক্ষ টন খাদদ্রব্যের আশ্বাস পেয়েছেন। এই ২৫ লক্ষ টন খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে ইতোমধ্যেই ১৫ লক্ষ টন খাদ্য। দ্রব্য বাংলাদেশে এসে পৌছেছে বলে খাদ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তবে দেশের খাদ্যদ্রব্যের বর্তমান অগ্নি। মূল্যের ফলে জনসাধারণ যে চরম অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে, খাদ্যমন্ত্রী তা স্বীকার করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রতি মাসেই বিদেশ থেকে প্রচুর খাদ্যদ্রব্য আমদানি করা হচ্ছে। গত মাসে সরকার বিদেশ থেকে সাড়ে ৩ লক্ষ টন খাদ্যদ্রব্য লাভ করছে বলে মন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, চলতি মাসে সরকার বিদেশ থেকে সাড়ে ৪ লক্ষ টন খাদ্যদ্রব্য পাবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। খাদ্যমন্ত্রী শ্রী মজুমদার বলেন, চলতি মাসে পূর্ণাঙ্গ রেশনিং, সংশোধিত রেশনিং ও রিলিফের মাধ্যমে বিতরণের জন্য সরকার ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার টন খাদ্যদ্রব্য বরাদ্দ করছেন। ইতোপূর্বে এই দেশে এক মাসে এতো অধিক খাদ্যদ্রব্য কখনো বরাদ্দ করা হয় নাই বলে মন্ত্রী মহোদয় উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী পরিষদে পর্যালোচনা : মন্ত্রী তার ভাষণে বলেন, অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কেবিনেট সাব-কমিটির বৈঠকে বর্তমান খাদ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় ও পরিস্থিতির বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয়।
মজুতদারদের প্রতি হুঁশিয়ারি : খাদ্যমন্ত্রী খাদ্যদ্রব্যের মজুতদারদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অনতিবিলম্বে মজুতদার, মুনাফাখোর ও কালোবাজারীরা যদি তাদের অপকর্ম বন্ধ না করে তাহলে সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
প্রয়োজনাতিরিক্ত খাদ্য ক্রয় সম্পর্কে : দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে স্ব স্ব প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্য ক্রয় না করার জন্য খাদ্যমন্ত্রী জনগণের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেন যে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্য ক্রয় করলে ব্যবসায়ীরা মূল্য বৃদ্ধির সুযোগ লাভ করে।
বিকল্প খাদ্য গ্রহণের আবেদন : বর্তমান খাদ্য পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে কেবল চাউলের ওপর নির্ভর না করে আটা ব্যবহারের জন্যও খাদ্যমন্ত্রী জনগণের প্রতি আবেদন জানান। তাছাড়া খাদ্যদ্রব্যের মজুতদার ও কালোবাজারী সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে পুলিশকে খবরদানের জন্যও খাদ্যমন্ত্রী নাগরিকদের প্রতি আবেদন জানান। খাদ্যদ্রব্যের ডিলারগণ খাদ্যদ্রব্য বিতরণের ব্যাপারে কোনো প্রকার দুর্নীতি করলে তা কর্তৃপক্ষের গোচরীভূত করার জন্য ও খাদ্যমন্ত্রী আবেদন জানিয়েছেন।৫৮

রেফারেন্স: ১৮ আগস্ট ১৯৭২, দৈনিক ইত্তেফাক
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ