বঙ্গবন্ধুর সাথে সাক্ষাতের জন্য ভুট্টোর লন্ডন যাত্রার প্রস্তুতি
লন্ডন। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টো অবশেষে বাংলাদেশকে আগে স্বীকৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে সাক্ষাতের জন্য যে কোনো মুহূর্তে লন্ডন যাত্রার জন্য উদগ্রীব হয়ে রয়েছেন। বঙ্গবন্ধু পিত্তপাথুরীর অস্ত্রোপচারের জন্য বর্তমানে বৃটিশ রাজধানী লন্ডনের একটি ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছেন। লন্ডনের বহুল প্রচারিত ডেলী টেলিগ্রাফ পত্রিকায় পাকিস্তানস্থ প্রতিনিধি করাচি থেকে প্রেরিত এক সংবাদে জানান বঙ্গবন্ধুর সাথে সাক্ষাতের জন্য ভুট্টো যে প্রস্তুতি নিচ্ছেন এ সম্পর্কে লন্ডনেও বেশ কল্পনা জল্পনা চলছে। এ খবরটি সম্পর্কে মুখপাত্র কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। অপরদিকে পাকিস্তানি সূত্রে বলা হয় যে, আগামি সপ্তাহের শেষ ভাগে ভুট্টোর লন্ডন সফরের সম্ভাবনা রয়েছে। খবরে ভুট্টোর লন্ডন যাত্রার প্রস্তুতি উক্ত তথ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে যে, অস্ত্রপচার শেষে বঙ্গবন্ধু সুস্থ হয়ে ওঠার পর তার সাথে সাক্ষাতের জন্য প্রেসিডেন্ট ভুট্টো লন্ডন যাবেন। পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়ে দেবে। পাকিস্তানের তথ্য ও বেতার মন্ত্রী মওলানা কাওসার নিয়াজীও দলীয় কর্মীদের কাছে ঘোষণা করেছেন যে, পাকিস্তান। বাংলাদেশকে শীঘ্রই স্বীকৃতি দেবে। বৃটিশ মহল এখনও কোনো ধরাবাধা মন্তব্য করছে না। তারা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের প্রশ্নে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সিদ্ধান্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। তারা স্বীকার করেন যে, গত সপ্তাহে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শরণসিং বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্যার আলেক ডগলাস হোমের কাছে যে ব্যাখ্যা দান করেছেন, তারই ভিত্তিতে বৃটিশ এ ভূমিকা নিয়েছে। বাসসের সংবাদে প্রকাশ, প্রেসিডেন্ট জুফিকার আলী ভুট্টোর ঘনিষ্ঠ সহচর ও পাকিস্তানের তথ্য ও বেতার দফতরের মন্ত্রী মওলানা কাওসার নিয়াজী তার দলের লোকদের বলেছেন যে, পাকিস্তান নিকট ভবিষ্যতেই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেবে। সকালে রেডিও পাকিস্তানের খবরে একথা জানা যায়। মওলানা নিয়াজী মুলতানে পিপলস পার্টির কর্মীদের এক সভায় বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। তিনি দেশবাসীকে ঐক্য রক্ষার আবেদন জানান। বাংলাদেশের অসুস্থ প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে বলা হয় যে, ভুট্টোর সাথে কোনো আলোচনায় যোগ দেয়ার ইচ্ছে বঙ্গবন্ধুর নাই। উক্ত সূত্রে আরো বলা হয় যে, পাকিস্তান দু’ দেশের নেতাদের মধ্যে আলোচনার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি না করা পর্যন্ত কোনো শীর্ষ বৈঠকের প্রশ্নই ওঠে না।১০৫
রেফারেন্স: ২৮ জুলাই ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ