You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.07.26 | বুদ্ধিভ্রষ্ট ইয়াহিয়া গত ডিসেম্বর যুদ্ধের হোতা | দৈনিক আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

বুদ্ধিভ্রষ্ট ইয়াহিয়া গত ডিসেম্বর যুদ্ধের হোতা

নয়াদিল্লি। পাকিস্তানের অবসর প্রাপ্ত বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার মার্শাল নূর খান। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, ইয়াহিয়া খানই গত ডিসেম্বরের যুদ্ধের হোতা। তার জন্য বাংলাদেশে পাকিস্তানি ফৌজকে ভারতের সৈন্যদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছিল মুক্তিবাহিনীর কাছে নয়। করাচির সামরিক পত্রিকায় ‘আউট লুক’। প্রখ্যাত সাংবাদিক আই এইচ বার্নি তার সম্পাদক। নূর খান পত্রিকাটির গত ২৪ জুন সংখ্যায় লিখেছেন ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে এক নিষ্ঠুর গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। তিনি বলেন, নয় মাস এ যুদ্ধ চলছে। ততদিনে সারা পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ বিগড়ে গেছে। পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছে। এমন করে বাংলাদেশের পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে গেল। ২২ নভেম্বর তিনি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেন। অজুহাত ভারত “পূর্ব পাকিস্তানে হামলা করেছে। এয়ার মার্শাল নূর খানের মতে এতে মোড় ঘুরে যায়। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে লড়াই বাধে। তিনি এই সম্পর্কে আরও যুক্তি দেখান। বলেন, জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা ঠিক হয়নি এতে ভারতকে সতর্ক করে দেয়া হয় যে, আমরা সংঘাত বাড়াতে চলেছি অথচ জরুরি অবস্থার আগে দু’দেশের সংঘাত বিক্ষিপ্ত সীমান্ত সংঘর্ষে সীমিত ছিল। তিনি বলেন, এতসবের উদ্দেশ্য (সাবেক) পূর্ব পাকিস্তানকে রক্ষা করা নয়। ভারতকে সরাসরি জড়িত করা। কারণ রক্ষা করা নয়। বলা যায়, এক বেপরোয়া জুয়া খেলা হয়ে গেল। যার উদ্দেশ্য পূর্ব পাকিস্তান হারাবার ক্ষতি মানিয়ে নেওয়া। যার উদ্দেশ্য সমস্যাটিকে আন্ত জাতিক রূপ দিয়ে যুদ্ধ বিরতি হাসিল করা। তিনি আরও বলেন যে, জেনারেল ইয়াহিয়ার আশা ছিল বাংলাদেশে এই আটকা পড়া পাকিস্তানি ফৌজ ভারতীয় সৈন্যদের কাছে আত্মসমর্পণ করবে মুক্তিবাহিনীর কাছে নয়। এয়ার মার্শাল নূর খানের এ নিবন্ধের অন্যরকম কয়েকটি বৈশিষ্টও রয়েছে। সত্যের সন্ধান তিনি এতে করেছেন। কিন্তু সামরিক অভিলাষ এখনও তার দৃষ্টি আচ্ছন্ন করে রেখেছে। তিনি সামরিক পরাভবের জন্য জেনারেল ইয়াহিয়াকে দোষী করেছেন। সঙ্গে আবার বলেছেন, যোগ্য নেতৃত্ব পেলে পাকিস্তান সমর শক্তিতে পুনরায় শক্তিমান হয়ে উঠতে পারে। তিনি বলেন, ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়ন ‘জোটবদ্ধ পাকিস্তানকে তার মোকাবেলা করতে হবে। এজন্য চীনের সাথে মৈত্রী চাই যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মৈত্রী অক্ষুন্ন রাখা চাই।
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি : বাংলাদেশের স্বীকৃতি দানে তিনি ভিন্নমত প্রকাশ করেন। তার বক্তব্য স্বীকৃতি শর্ত সাপেক্ষে যুদ্ধবন্দিদের ফিরিয়ে দিতে হবে, যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারে অযৌক্তিক দাবি বাদ দিতে হবে। বিষয় সম্পত্তির হিসাব নিকাশ করতে হবে। তিনি বলেন, পরাজিত হয়েছি বলে স্বীকৃতি দিতে হবে, এমন কোনো কথা নেই।১০০

রেফারেন্স: ২৬ জুলাই ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ